গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে (দশম, একাদশ ও দ্বাদশ) ২০ লাখের বেশি মৃত ব্যক্তির নামে ভোট দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসিরউদ্দিন। তার ভাষ্য মতে, এই ভুয়া ভোটের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল তৎকালীন তিনটি নির্বাচন কমিশন, যাদের প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থন ছিল।
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি নাসিরউদ্দিন বলেন, “ওরা কবরবাসী ভোটার—কবর থেকে এসে ভোট দিয়েছেন। মৃত ভোটারদের সংখ্যা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল, যা ২০ লাখেরও বেশি।”
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, তিনটি জাতীয় নির্বাচনে দেশের ১২ কোটির বেশি ভোটার ভোট দিতে পারেননি। এর মধ্যে সাড়ে চার কোটিরও বেশি ছিলেন নতুন ভোটার। এসব অনিয়মের কারণে ওই তিনটি নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মৃত ভোটার দিয়ে ভোট: সিইসি জানান, মৃতদের তথ্য যথাসময়ে ভোটার তালিকা থেকে বাদ না দেওয়ায় নির্বাচনগুলোতে মৃত ব্যক্তির নামে ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল। বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতাকর্মীরা ও তাদের সহযোগীরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠে এসেছে।
নতুন ভোটার তালিকার আশাবাদ: তবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন আশাবাদ ব্যক্ত করেছে যে, হালনাগাদ করা নতুন ভোটার তালিকার মাধ্যমে ভবিষ্যতের নির্বাচনে এমন অনিয়মের পুনরাবৃত্তি হবে না। ইসি বলছে, “নতুন ও পুরোনো—সব ভোটার এবার সুষ্ঠুভাবে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।”
নির্বাচন বিশ্লেষক ও স্থানীয় সংস্কার কমিশনের আহ্বায়ক ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, “বিগত তিনটি নির্বাচন ছিল প্রহসনের। তাই মানুষ ভোটে আগ্রহ হারিয়েছে। তবে বর্তমান কমিশনের হালনাগাদ ও সংস্কার প্রচেষ্টায় উৎসবমুখর ভোটের প্রত্যাশা করা যায়।”
উপসংহার: নির্বাচন ব্যবস্থায় আস্থা ফিরিয়ে আনতে এবং সঠিক ও নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়নে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবার যে কোনো ধরনের ভুয়া ভোট ঠেকাতে কমিশন কঠোর অবস্থানে আছে বলেও আভাস মিলেছে।