ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গের পর নতুন করে গাজায় চালানো সামরিক অভিযানে নিহত শিশুর সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) এ তথ্য নিশ্চিত করেন গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চলমান হামলায় মোট প্রাণহানি এরই মধ্যে ১,৫০০ পেরিয়ে গেছে।
শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২০ জনেরও বেশি, যাদের মধ্যে রয়েছে একাধিক শিশু। শনিবারের সর্বশেষ বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন, যার মধ্যে একজন শিশু।
গাজার তুফ্ফাহ এলাকায় দুটি শিশুসহ চারজন, বেইত লাহিয়ার আল-আতাতরায় আরও দুইজন এবং খান ইউনুসের দক্ষিণাঞ্চলের কিজান আন-নাজ্জারে ড্রোন হামলায় একজন নিহত হন। এছাড়া, ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে চিহ্নিত আল-মাওয়াসি এলাকায় তাবুতে বসবাসরত নিরীহ মানুষদের ওপরও হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।
আল-আহলি হাসপাতালে কর্মরত আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খোদারি জানান, এক নবজাতক শিশুর হাত কেটে ফেলতে হয় বোমা বিস্ফোরণে—পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করে সে। শনিবার সকালেই নিহত হয় আরও ছয়জন।
তিনি আরও জানান, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শুজাইয়া ও খান ইউনুসে নতুন করে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে, যার ফলে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় আরও গভীরতর হচ্ছে। খাদ্য, পানি ও ওষুধের মারাত্মক সংকটে ভুগছেন গাজার নারী ও শিশুরা।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি জানান, গত ১৮ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের ২২৪টি হামলার মধ্যে ৩৬টি হামলাতেই শুধুমাত্র নারী ও শিশু নিহত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সহিংসতা শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং এটি একটি চলমান মানবিক বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরছে। বিশ্ব সম্প্রদায়কে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন তারা।