পরিবহন শ্রমিকদের অঘোষিত ধর্মঘটের কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে পরিবহন শূন্য হয়ে যাচ্ছে। ফলে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ ছাড়াও টাঙ্গাইল থেকে জামালপুর ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বুধবার সকাল থেকে মহাসড়কে যানবাহন তেমন চলছে না। এতে মহাসড়কে যানবাহন ফাকা হয়ে গেছে। সকাল থেকেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কাঙ্খিত পরিবহন না পেয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীরা গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে। কিন্তু বাস নেই। তারা অপেক্ষা করছে। মহাসড়কে দু-একটি বাস, কিছুসংখ্যক ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলছে। উত্তরবঙ্গগামী কিছু পরিবহন চললেও টাঙ্গাইল থেকে ঢাকাগামী কোনো বাস চলতে দেখা যায়নি। এছাড়া টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কেও তেমন বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি। অপরদিকে কয়েকটি লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্রাইভেট কার চলেছে। বেশির ভাগ সময়ই মহাসড়ক যানবাহন শূন্য হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ থেকে সকাল থেকে এ পর্যন্ত ২০ ভাগ পরিবহন বঙ্গবন্ধু সেতু পাড় হয়নি। যা স্বাভাবিকের তুলনায় খুবই সামান্য বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, নতুন সড়ক আইন ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও দুই সপ্তাহ ধরে আইন পালণে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে দুই সপ্তাহ শিথিলছিল নতুন আইনের কার্যকারিতা। সোমবার থেকে আইন কার্যকর হতে পারে, এমন শঙ্কায় অঘোষিত কর্মবিরতি পালণ করছেন করছেন শ্রমিকরা।
এদিকে গত সোমবার থেকে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় পরিবহন ধর্মঘট শুরু করে পরিবহন শ্রমিকরা। তবে বুধবার সকাল ১১টার দিকে টাঙ্গাইলে পরিবহন চলাচল পুরোপরি বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা।
এলেঙ্গায় অপেক্ষরত যাত্রী ইয়াকুব আলী বলেন, ‘আমি সকালে ঢাকার আব্দুল্লাহপুরে ২ ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে উত্তরবঙ্গের বাসে উঠি। এ সময় ১শ’ টাকার গাড়ি ভাড়া নেয় আড়াইশ’ টাকায়। পরে আমি টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় নামি। এলেঙ্গা থেকে নিজ বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা যাওয়ার জন্য দেড় ঘন্টা ধরে দাড়িতে থেকেও কোন বাস পায়নি। যাও দু’টি বাস পাওয়া যাচ্ছে ভাড়া চাচ্ছে কয়েকগুণ।’
আরেক যাত্রী সবুজ মিয়া বলেন, ‘আমি মধুপুরে যাওয়ার জন্য প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে এলেঙ্গায় বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন বাস পাচ্ছি না। এতে আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। আমরা এ ব্যাপারে সরকারের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে সাধারণ জনগণ হয়রানির শিকার না হয়।’
টাঙ্গাইল জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন সরকার বলেন, ‘শ্রমিক ও মালিক সমিতির পক্ষ থেকে গাড়ি বন্ধের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। মাথায় ফাঁসির দন্ড নিয়ে কোন চালক গাড়ি চালাতে চাচ্ছে না। তাই তারা আইনের কিছু কিছু ধারা পরিবর্তনের জন্য স্বেচ্ছায় গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিয়েছে।’
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি ইকবাল হোসেন বলেন, ‘বুধবার সকাল ১১টার দিকে শ্রমিকরা প্রায় সব রোডে বাস চলচল বন্ধ করে দেয়। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, ঢাকা এবং উত্তরবঙ্গগামী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। মাঝে-মধ্যে ঢাকাগামী দু’একটি গাড়ি চললেও তা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাবে। শ্রমিকরা পরিবহন আইন সংশোধন চান।