টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার সেনেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান চলায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যাচ্ছে। ভবনটি এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে যে, সম্প্রতি ক্লাস চলাকালে ছাদের ফ্যান খুলে পড়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক আহত হন।
বিদ্যালয়ের দেয়ালে ফাটল ধরেছে, ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ছে, দরজা-জানালাও ভেঙে গেছে। ফলে ভবনটি কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে পুরনো একটি টিনের চালার তিন কক্ষবিশিষ্ট ভবনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে, তবে সেটিও ভগ্নদশায়।
বৈরাণ নদের তীরে অবস্থিত এই বিদ্যালয়টি নদীভাঙনেরও হুমকিতে রয়েছে। ঘরের বারান্দার খুঁটি ভেঙে গেছে, পাশে শুকনো আমড়া গাছটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে, যা যে কোনো সময় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুবই কম। শিক্ষক সংকটও তীব্র। মোট পাঁচটি পদ থাকলেও বর্তমানে মাত্র একজন শিক্ষক পাঠদান করছেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক জানান, “আমি একাই ক্লাস নেওয়া, অফিসের কাজ, এমনকি টিকা নিবন্ধনের দায়িত্বও পালন করছি। অন্য শিক্ষকেরা ছুটিতে আছেন এবং পিয়ন বর্তমানে জেলে আছেন। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে অভিভাবকেরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ জরুরি।”
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি গোপালপুর উপজেলা শাখার সভাপতি বিলকিস সুলতানা বলেন, “ফ্যান পড়ে শিক্ষক আহত হওয়ার পর আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ব্যবহার না করতে এবং নতুন ভবনের জন্য আবেদন করতে পরামর্শ দিয়েছি।”
গোপালপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মফিজুর রহমান জানান, “উপজেলার সব ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকা তৈরি করে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। সেনেরচর বিদ্যালয়ের শিক্ষক অনুপস্থিতির বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”











