রাজধানীর বনানীতে তুচ্ছ ঘটনায় ছুরিকাঘাতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকার কাইচান গ্রামে। স্বজন ও এলাকাবাসী এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না পারভেজ আর নেই।
রোববার (২০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় পারভেজের মরদেহ গ্রামে পৌঁছালে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পুরো পরিবেশ। ছেলেকে হারিয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন তার মা। জ্ঞান ফিরে বারবার বলছেন, ‘আমার পুতেরে আইনা দাও, আমি একটাবার মা ডাক হুনবার চাই।’
ছেলের মৃত্যুসংবাদ শুনে কুয়েত থেকে দেশে ফিরেছেন বাবা জসিম উদ্দিন। চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি তিনিও। কান্না করতে করতে বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনায় আমার ছেলেকে হত্যা করল কেন? ওর একটা হাত ভাঙত, একটা পা ভাঙত, অন্তত “বাবা” বলে ডাক শুনতাম। এখন আমি বাঁচি আর না বাঁচি, কী আসে যায়?’ তিনি ঘাতকদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানান।
পারভেজ ছিলেন প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। গত শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ও টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা নিয়ে সংঘর্ষের একপর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পারভেজ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে মরদেহ হস্তান্তরের পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাত ১০টায় গ্রামে দাফন করা হয়।
ঘটনার পর পারভেজের ভাই হুমায়ুন কবীর বনানী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিরা হলেন—মাহাথি, মেহেরাব, আবুজর গিফারী, সোহান তুষার নেয়াজ, হৃদয় মিয়াজী, রিফাত, আলী ও ফাহিম।