বিচারক হিসেবে বেআইনি ও বিদ্বেষমূলক রায় দেওয়া এবং জাল রায় তৈরির অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বুধবার (৩০ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সংশ্লিষ্ট মামলাটি শাহবাগ থানায় দায়ের করা হয়। এদিন কারাগার থেকে খায়রুল হককে আদালতে হাজির করা হলে শুনানির পর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ সময় আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই খালেক মিয়া আদালতে জানান, প্রাথমিক তদন্তে খায়রুল হকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মামলাটি গুরুত্ব বিবেচনায় ৪ আগস্টের পূর্ব নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করে ৩০ জুলাই শুনানির আবেদন জানানো হয়, যা আদালত গ্রহণ করে।
মামলার পটভূমি:
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহা. মুজাহিদুল ইসলাম গত ২৭ জুলাই শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন। অভিযোগে বলা হয়, বিচারপতি খায়রুল হক সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী এবং অবসর পরবর্তী পদের আশায় ২০১১ সালের ১০ মে ঘোষিত সংক্ষিপ্ত আদেশকে পরিবর্তন করে ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় বেআইনিভাবে প্রকাশ করেন।
এ ঘটনায় বলা হয়, ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন করা হয়, যা ২০০৪ সালে হাইকোর্ট বৈধ ঘোষণা করে। তবে ২০১১ সালে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে রায় দেয়। পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ রায়ে রায় বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
এছাড়া, গত ২৪ জুলাই ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। একইদিনে যুবদল নেতা আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার এক মামলাতেও ভার্চুয়ালি গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এই মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় এটি জাতীয় রাজনীতি ও বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা নিয়ে জনমনে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।