শাক-সবজি, চাল, ডাল, ডিম, মুরগি ও মাছসহ প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। বাজারে গিয়ে সাধারণ মানুষ হাহাকার করলেও সমাধান নেই। ক্রেতারা বলছেন, তাদের আয় না বাড়লেও ব্যয় দ্রুত বাড়ছে। ফলে বাজারে এসে প্রয়োজনের তুলনায় কম কিনতে হচ্ছে। সবজির দাম এখন অনেকের নাগালের বাইরে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) টাঙ্গাইলের পার্ক বাজার, সিটি বাজার, আমিন বাজার ও ছয়আনী বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজার করতে আসা শিক্ষক কবির হোসেন বলেন, বাজারে কোনো পণ্যে হাত দিতে ভয় লাগে। দরদামের সুযোগ নেই। ব্যবসায়ীরা যে দাম বলেন, সেভাবেই কিনতে হচ্ছে। একই অভিযোগ করেন ক্রেতা মাসুদও। তার অভিযোগ, মনিটরিং না থাকলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
সপ্তাহ ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির কেজি বেড়ে হয়েছে ১৭০-১৮০ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৬০০-৭০০ টাকায়। ডিমের দামও বেড়েছে। প্রতি ডজন লাল ডিম ১৫০ টাকা, সাদা ডিম ১৪০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে চড়া দাম: গোল বেগুন ১৬০ টাকা, টমেটো ১৭০, করলা ১২১, ঢেঁড়স ৬০, কাঁকরোল ৮০, পটল ৭০, ধুন্দল ৮০, শসা ৭০, কচুর মুখী ৬০ ও পেঁপে ৩০ টাকা কেজি। ধনেপাতা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজিতে এবং প্রতি লাউ ৭০-৮০ টাকা। শাকের মধ্যেও একই চিত্র—লাউ শাক ৫০, পুঁইশাক ৪০, ডাঁটাশাক ২৫, কলমি ১৫, পাটশাক ১৫ এবং লালশাক ৩০ টাকা।
চালের বাজারেও স্বস্তি নেই। মিনিকেট ৮২-৮৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫-৯২ এবং মোটা চাল ৫৬-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মসুর ডাল প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহে ২০ টাকা বেড়েছে। ভারতীয় মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০৫ টাকায়। খোলা আটা ৫০ এবং প্যাকেট আটা ৫৫-৬০ টাকা।
মাছের দামও ঊর্ধ্বমুখী। চাষের রুই ৩৮০-৪৫০ টাকা, কাতল ৪৫০, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, পাঙাশ ১৮০-২৩০ এবং পাবদা ও শিং ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শুধু কাঁচা মরিচে মিলছে সামান্য স্বস্তি। ভারতীয় কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা এবং দেশি মরিচ ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, আমদানি বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব জানায়, বাজারে একটি শ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। পর্যাপ্ত আমদানি ও মজুত থাকা সত্ত্বেও অস্বাভাবিক দামের পেছনে সিন্ডিকেটের প্রভাব কাজ করছে। ক্যাবের মতে, শুধু ভোক্তা অধিদপ্তরের তদারকি নয়, আমদানি, পাইকারি ও উৎপাদক পর্যায়েও নজরদারি জোরদার করা জরুরি।