বিশেষ প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে দুই মেয়ের সাথে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল বাবা জয়নাল আবেদীন (৪৪) নামের ব্যক্তি।
পরে ফলাফলে দুই মেয়ের একজন কৃতকার্য এবং অপরজন অকৃতকার্য হলেও বাবা জয়নাল ফলাফল নম্বরে এগিয়ে।
ঘোষিত কারিগরি বোর্ডের অধীন এসএসসি পরীক্ষার ভোকেশনাল শাখা থেকে বাবা জয়নাল পোল্টি রিয়ারিং এন্ড ফার্মিং বিষয়ে জিপিএ ৪ দশমিক ৮৬ পেয়েছেন।
এতে বড় মেয়ে জেসমিন আক্তার ঢাকা বোর্ডের অধীন মানবিক শাখা থেকে জিপিএ ৩ দশমিক ৩৩ পেয়ে কৃতকার্য হয়েছে।
এছাড়া তার আরেক মেয়ে আছিয়া খাতুন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে।
বাবা জয়নাল আবেদীন উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের ফুলমালিরচালা গ্রামের বাসিন্দা।
তিনি ফুলমালীরচালা ফজরগঞ্জ আলিম মাদরাসা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
তার দুই মেয়ে উপজেলার ফুলমালিরচালা ছাকেদ আলী হাইস্কুল এন্ড কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
বড় জেসমিন আক্তার জানায়, বাবা মেয়েরা একসাথে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি এটা খুবই আনন্দের; তবে আমার চেয়ে বাবা ফলাফলে এগিয়ে।
তবে ছোট বোন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় আনন্দ কিছুটা কম তারপরও ভাল লাগছে বাবা পরীক্ষায় পাস করেছে বেশি নম্বর পেয়ে।
বাবার অদম্য ইচ্ছা-শক্তির কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। আমরা বাবার সফলতায় আনন্দিত।
জয়নাল আবেদীন বলেন, ১৯৯৬ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। সংসারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এরপর সৌদি আরবে ৫ বছর প্রবাসী জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে আসি। পরে ২০০১ সালে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করি।
কিন্তু বুকের ভেতরে লেখাপড়া করতে না পারার চাপা কষ্ট মাঝে মধ্যেই আমাকে পীড়া দিতো। লোকলজ্জার কারণে পড়ালেখা হয়ে উঠছিলো না।
পরে ২০২০ সালে ফুলমালীর চালা ফজরগঞ্জ আলিম মাদরাসায় ভোকেশনাল শাখার পোল্টি রিয়ারিং এন্ড ফার্মিং ট্রেড শাখায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই।
পরে এসএসসি পরীক্ষায় মেয়েদের সাথে আমিও অংশগ্রহণ করি। এতে মেয়েরা আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেয়েছি।
ফুলমালীর চালা ফজরগঞ্জ আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর কাদের বলেন, ৪৪ বছর বয়সে এসে এসএসসি পাস করায় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। সম্পাদনা – অলক কুমার