ভূঞাপুর সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে অভিনব রাজকীয় কায়দায় যমুনা নদীতে নৌকা ভাসিয়ে তাতে জুয়ার আসর পরিচালনা করা হচ্ছে।
জুয়াড়িরা ছোট ছোট খেয়া নৌকাযোগে ভাসমান বড় নৌকায় গিয়ে নামছে।
আর তাতেই চলে দিনরাত ভর জুয়া খেলা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে গোবিন্দাসী নৌ পুলিশ ফাঁড়ি ভূঞাপুর থানার দিকে আঙ্গুল তুলেন।
আর ভূঞাপুর থানা সিরাজগঞ্জ থানার দিকে আঙ্গুল তুলে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে জেলার ভূঞাপুর উপজেলার কুঠিবয়ড়া হতে গাবসারার রামপুর পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে জুয়াড়িদের নিরাপদ স্থানে ভাসমান জুয়া খেলা চলছে।
শুধু জুয়াই নয়, সাথে চলে মাদক সেবন ও বিক্রি। ছোট ছোট ইঞ্জিন চালিত নৌকাযোগে জুয়াড়িরা মধ্যে নদীতে যাচ্ছে।
সেখানে আগে থেকে থাকা জুয়ার নৌকা অপেক্ষা করছে তাদের নিতে।
এরপর নিরাপদ স্থানে নৌকা ভাসিয়ে দিয়ে তাতেই চলে জুয়া খেলা।
আর এই খেলা নজরদারী করতে জুয়াড়ি বোর্ড পরিচালনাকারীরা তাদের নিজস্ব লোকবল গোবিন্দাসী ঘাট থেকে গোপালপুর উপজেলার নলীন পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে নিয়োজিত রেখেছে খোঁজ খবর রাখার জন্য।
দূরের ওই বজরা বা ভাসমান নৌকাটি জুয়া খেলার জন্যই তৈরি করেছেন স্থানীয় উপজেলার কুঠিবয়ড়া গ্রামের মামুন।
আর তাতে জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করছে জুয়াড়ি খ্যাত ফজল মন্ডল।
জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারা দেশেই যখন জুয়া ক্যাসিনো বন্ধে কঠোর অবস্থানে সেখানে টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে যমুনা নদীর বিভিন্ন অংশে অবাধে চলছে বড় ধরণের জুয়ার আসর।
অনেকটা ঘটা করেই দিনের পর দিন বজরা (ভাসমান) নৌকায় চালানো হচ্ছে এ অবৈধ কার্যক্রম। ঢাকাসহ সারাদেশের জুয়াড়ীরা নিরাপদ আস্তানা ভেবে এই যমুনা নদীতে ভাসমান জুয়ার আসরে আসছে।
কেবল জুয়া নয় সেখানে অবাদে চলছে মাদকের সেবন ও ব্যবসা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, আয়োজকরা প্রভাবশালী।
সেইসাথে প্রশাসন ও ক্ষমতাবানদের সাথে তাদের সখ্যতা থাকায় তাদের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাননা তারা।
দিনে দুপুরে যমুনা নদীতে ভাসমান ওই নৌকায় বড় ধরনের জুয়ার আসর হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের বক্তব্য –
গোবিন্দাসী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল মান্নান জানান, যমুনা নদীর বঙ্গবন্ধু সেতু হতে গোপালপুরের নলীন পর্যন্ত নৌপুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করে। এরমধ্যে কোথাও নদীতে ভাসমান নৌকায় জুয়া খেলার কোন খবর নেই।
তবে থানার অধীন বিভিন্ন নদীর শাখা-প্রশাখা বা খালগুলোতে হয়তবা জুয়া খেলতে পারে।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রাশিদুল ইসলাম জানান, যমুনা নদীতে ভাসমান নৌকায় জুয়া খেলার কোন তথ্য নেই।
তবে সিরাজগঞ্জের সীমানায় জুয়ার খেলার খবর পাওয়ার পর সেখানকার থানা পুলিশের মাধ্যমে সেটার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।
আগের ঘটনা –
এরআগে চলতি বছরের শুরুতে ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী যমুনা ঘাট সংলগ্ন কাঁশবনে জুয়ার আসরের সংবাদ সংগ্রহে গেলে হামলার শিকার হতে হয় সাংবাদিকদের।
পরে মামলা হলে দীর্ঘ আন্দোলনে পর গ্রেফতার হয় জুয়ার মূল হোতা ফজল মন্ডলসহ আটজন।
তখন বেসরকারি টেলিভিশন ডিবিসি নিউজের জেলা প্রতিনিধি সোহেল তালুকদার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। পরে ভূঞাপুর থানা পুলিশ ফজল মন্ডলকে প্রধান করে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোপত্র জমা দিয়েছে। সম্পাদনা – অলক কুমার