নিজস্ব সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের গণপূর্ত ভবনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই চলছে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ।
টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবালিয়ায় “একতা টাওয়ার” নামে ১৮ তলা ভবন নির্মাণ কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশনা মানছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভবন কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের সকল অনুমোদন আছে।
এদিকে অনুমোদনবিহীন অপরিকল্পিতভাবে বেজমেন্টের কাজ শুরু করার কারণে নগরজালফৈ-রাবনা (এন-৪০৪) জাতীয় মহাসড়কের ৪র্থ কি.মি. অংশে মূল সড়কে ফাটল দেখা দিয়েছে।
ঘটনাটি টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ০১ ফেব্রুয়ারি তারিখে বিসি কমিটিকে লিখিতভাবে জানান।
পরবর্তীতে ০৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সুউচ্চ বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কমিটির সদস্য সচিব সকল প্রকার নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা ও ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভবন কর্র্তৃপক্ষকে লিখিত নির্দেশ দেন।
কিন্তু সকল নির্দেশ অমান্য করে ০৫ মার্চ অনুমোদন ব্যতীত ভবনের বেজমেন্ট ঢালাই কাজ করেন ভবন কর্তৃপক্ষ।
গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃক ভবন কর্তৃপক্ষকে দেয় চিঠির সূত্রে জানা যায় এসব তথ্য।
এদিকে ভবন কর্তৃপক্ষ জানান, ভবনের নকশা, সড়ক ভবনের অনুমোদন পত্র, গণপূর্ত অনুমোদন পত্র, সিভিল এভিয়েশনের অনুমতি পত্র দেখাতে ব্যর্থ হন ভবন কর্তৃপক্ষ।
তবে টাঙ্গাইল পৌরসভা থেকে সাত তলা ভবন নির্মাণের একটি অনুমোদন দেখান নির্মাতারা; যা টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র জামিলুর রহমান মিরন অনুমোদনের বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন।
এছাড়াও ভবনের নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রেও রাস্তার প্রশস্ততার বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলে জানা গেছে। যা গণপূর্ত বিভাগের চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে।
অনুমোদনের জন্য কর্তৃপক্ষ ভবনের সামনে ২৩ মিটার বা ৭৫ ফুট রাস্তা দেখালেও বাস্তবে ৫৫ ফুট রাস্তা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সড়ক বিভাগের জরিপ শাখা।
সওজ-গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী ও জেলা প্রশাসকের বক্তব্য –
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহা. আলিউল হোসেন জানান, একতা টাওয়ারের নির্মাণ কাজের ফলে রাস্তায় ফাটল দেখা দিলে বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগকে অবহিত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চিঠি দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এছাড়া আমরা রাস্তার পরিমাপ করেছি; অনুমোদনের জন্য দেয় তথ্য মোতাবেক প্রশস্ত রাস্তা এখানে নাই। বিষয়টি বিসি কমিটিকেও জানানো হয়েছে।
এবিষয়ে টাঙ্গাইল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সুউচ্চ বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কমিটির সদস্য সচিব আল-আমীন মো. নূরুল ইসলাম জানান, কাজ বন্ধের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছিল।
তারপরও যদি তারা কাজ চলমান রাখে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নির্মান আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও বিসি কমিটির সভাপতি ড. মো. আতাউল গনি জানান, আমরা এই ভবনটি নির্মাণের অনুমোদন দেইনি; আমরা কোন অবৈধ কাজে উৎসাহ দিবনা; অবৈধ কাজে সম্পৃক্তও হবো না।
একতা টাওয়ার কর্তৃপক্ষ যদি অনুমোদন ব্যতিরেকে ভবনের কাজ করে থাকেন; তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে টাঙ্গাইল পৌরসভার অনুমোদন পত্র ছাড়া অন্য কোন অনুমোদন পত্র ১৫ দিনে দেখাতে না পারলেও; সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন একতা টাওয়ার কর্তৃপক্ষ। সম্পাদনা – অলক কুমার