বিশেষ প্রতিবেদক : ফুলের সাথে মৌমাছির; আর মৌমাছির সাথে মৌয়ালের প্রেম জমে উঠেছে।
শুরু হয়েছে সরিষা মৌসুম। আর এই মৌসুমেই তাদের প্রেমটা বেশি মাখো মাখো হয় মধুতে।
মৌমাছি সরিষা ফুল থেকে মধু এনে জমা করে মৌচাকে আর মৌচাক থেকে সেই মধু আহরণে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন মৌয়াল বা মৌচাষীরা।
সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌবক্স বসিয়ে এই মধু সংগ্রহ করে তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবছর টাঙ্গাইলে জেলায় এবার উফশী জাতের ২১ হাজার ২১৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ২৪ হাজার ৪৪৫ হেক্টর মোট ৪৫ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে।
ফলনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৭ হাজার ৯৬৮ মেট্রিকটন।
এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৫ হাজার ৩০ হেক্টর, বাসাইলে ৪ হাজার ৮২০ হেক্টর, কালিহাতীতে ৩ হাজার ১৩০ হেক্টর; ঘাটাইলে ২ হাজার ৩৫২ হেক্টর; নাগরপুরে ১০ হাজার ৭৫ হেক্টর; মির্জাপুরে ৮ হাজার ৯৪৫ হেক্টর; মধুপুরে ৪৬২ হেক্টর; ভূঞাপুরে ১ হাজার ৮৩০ হেক্টর; গোপালপুরে ৩ হাজার ৬০ হেক্টর; সখীপুরে ২ হাজার ১৪০ হেক্টর; দেলদুয়ারে ২ হাজার ৫৫০ হেক্টর এবং ধনবাড়ী উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে।
আর সেই সকল সরিষা ক্ষেত থেকে মৌবক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মৌয়ালরা।
অফিস সূত্র আরো জানায়, এ বছর টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ হাজার ১৭৫টি মৌবাক্স বসানো হয়েছে।
প্রতি বাক্স থেকে ছোট বক্স থেকে সপ্তাহে ৩-৪ কেজি; মাঝারি বক্স থেকে ৫-৭ কেজি আর বড় বক্স থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করা যায়।
এ মৌসুমে মৌয়ালরা প্রায় দেড়’শ টন মধু সংগ্রহ করার আশা করছেন।
সংশ্লিষ্টদের কথা –
টাঙ্গাইলের মৌয়ালরা জানান, তাদের সংগ্রহকৃত মধু বিভিন্ন কোম্পানি নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে সরবরাহ করে থাকে। এছাড়া খুচরা ভাবেও মধু বিক্রি হয়।
সরিষা চাষিরা জানান, মৌয়ালরা আসলে সরিষার ফলন আরো ভাল হয়। সরিষা ক্ষেতে মৌবাক্স বসানোতে লাভবান হচ্ছেন তারা।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আহ্সানুল বাসার জানান, মৌমাছির বিচরণের মাধ্যমে সরিষার ফুল’সহ অন্যান্য ফুলেও পরাগায়ন বৃদ্ধি পায়।
পরাগায়ন বৃদ্ধি পেলে সরিষার ফলন ২০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহের পাশাপাশি সরিষার ফলনও ভাল হয়।
এতে সরিষা চাষী ও মৌয়াল দুইজনেরই লাভ। দেশেরও লাভ। সম্পাদনা – অলক কুমার