আদালত প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলে দশম শ্রেনীর ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।
সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মাহবুবুর রহমান এ রায় দেন।
ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর ভরণপোষণ রাষ্ট্র বহন করবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
দন্ডিত যুবক শহীদুল ইসলাম খোকন (২৩)। তিনি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শেখ শিমুল গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে।
টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আলী আহমেদ জানান, ভিকটিম ঘাটাইল উপজেলার স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ১০ম শ্রেনির শিক্ষার্থী।
দন্ডিত শহীদুল ইসলাম খোকন ভিকটিমের প্রতিবেশি চাচাতো ভাই।
সেই সুযোগে খোকন ভিকটিমের বাড়িতে ও মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতো।
পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে।
সেই সর্ম্পকের সূত্র ধরে ২০২১ সালের ১ অক্টোবর বিয়ের আশ্বাস দিয়ে খোকন নিজের বাড়িতে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
এরপর সুযোগ পেলেই দন্ডিত খোকন ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ করতো। এতে ওই ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
পরে বিষয়টি ছাত্রীর পরিবারের লোকজন জানতে পারলে স্থানীয়ভাবে বিচার সালিসের ব্যবস্থা করা হয়। তখন খোকন তাকে বিয়ে করবে এবং ওই অনাগত সন্তানকে স্বীকৃতি দিবে বলে স্বীকার করে।
পরবর্তীতে খোকন মাদ্রাসা ছাত্রীকে বিয়ে না করে পালিয়ে যায়।
পরে ওই ছাত্রীর মামা ছানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২০২২ সালের ২০ মে ঘাটাইল থানায় শহীদুল ইসলাম খোকনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা না নেওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন।
পরে ওই ছাত্রী পুত্রসন্তান জন্ম দেন। ডিএনএ পরীক্ষায় আসামি খোকন ওই শিশুর জৈবিক পিতা বলে প্রমানিত হয়।
তদন্ত শেষে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদনপত্র জমা দেন।
পরে এই মামলায় নয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় শহীদুল ইসলাম খোকনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় বিচারক।
মামলাটি পরিচালনাকারী আইনজীবীগণ –
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আলী আহমেদ।
সহযোগিতা করেন সহকারি সরকারি কৌঁসুলি আব্দুর রহিম ও মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস।
এ মামলায় আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ইলিয়াস খান পারভেজ।