টাঙ্গাইলের মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান কলেজের প্রধান অফিস সহকারী (হেডক্লার্ক) জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁস, ফটোকপি বাণিজ্য, কলেজের মার্কেট কেনাবেচায় বাণিজ্যের মাধ্যমে অবৈধভাবে কোটি কোটি উপার্জনের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ফাইলপত্রে অনিয়ম, কলেজের অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির মাধ্যমে তিনি অল্প সময়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় তিনি বছরের পর বছর অপকর্ম চালিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগের পতনের পর ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে জহুরুল ইসলামের দুর্নীতির চিত্র। জহুরুল ইসলামের বক্তব্যেও সেটি প্রমাণিত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র বলছে, চাকরিতে যোগদানের সময় সাধারণ পরিবারের সদস্য ছিলেন জহুরুল ইসলাম। কিন্তু বর্তমানে টাঙ্গাইল পৌরসভার সন্তোষ এলাকায় তার মালিকানায় রয়েছে পাঁচতলা বিলাসবহুল ভবন, একাধিক প্রতিষ্ঠান ও বিপুল পরিমাণ জমি। এ বিপুল সম্পদের উৎস নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা ও প্রশ্নের ঝড়।
কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, তিনি চাকরিতে ঢোকার পর থেকেই কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস শুরু হয়। তিনি বেশ কয়েকবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়। কলেজ ও কলেজ মার্কেটের উন্নয়ন কাজ, ক্রয়-বিক্রয় ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটিয়ে জহুরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করেছেন। শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্টসহ বিভিন্ন কাগজপত্র প্রদানের ক্ষেত্রে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ১৭ বছর ধরে ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ থাকায় তার বিরুদ্ধে মুখ খোলা ছিল দুঃসাহসিক কাজ। মার্কশিট তুলতে গেলেই দিতে হতো অতিরিক্ত টাকা, অভিযোগ করলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হতো না।
এ বিষয়ে জহুরুল ইসলামকে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরবর্তীতে তিনি তার স্ত্রীকে দিয়ে ফোন রিসিভ করান। পরবর্তীতে তিনি অন্য একটি মাধ্যমে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমার সব সম্পদ বৈধ পথে অর্জিত।”
এদিকে, স্থানীয়দের দাবি—জহুরুল ইসলামের অবৈধ সম্পদের উৎস তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।