টাঙ্গাইল শহরের কান্দাপাড়া এলাকার যৌনপল্লিতে বাসনা আক্তার (১৯) নামে এক যৌনকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেল আনুমানিক ৫ টার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। তবে যৌনকর্মীদের অভিযোগ বাসনা আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তার কথিত প্রেমিক মাসুদ।
তবে পুলিশ বলছে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। ঘটনাটির বিষয়ে বর্তমানে তদন্ত চলমান রয়েছে।
জানা গেছে, বাসনা আক্তারের মা-বাবা নেই। ছোটবেলা থেকেই শহরের কান্দাপাড়া যৌনপল্লিতে বড় হয়েছে সে। পরে সেখানেই যৌনকর্মী হিসেবে যোগ দেন তিনি। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের চর খিদিরপুর গ্রামের মৃত মো. লাল মিয়ার ছেলে মাসুদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বাসনা। মাসুদ পেশায় একজন রিকশাচালক।
ঘটনা প্রসঙ্গে কর্মরত যৌনকর্মীরা জানায়, প্রতিনিয়তই বাসনার ঘরে যাতায়াত করতেন মাসুদ। তাদের মধ্যে প্রায় সব সময়ই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। মঙ্গলবার দুপুরে মাসুদকে বাসনা কয়েকবার ফোন দিয়ে আসতে বলেন। বারবার ফোন দেওয়ার ফলে মাসুদ সেখানে আসতে বাধ্য হয়। পতিতালয়ের পাশেই বিক্রি হয় রেক্টিফাইড স্পিরিট। সেই দোকান থেকে মাসুদ রেক্টিফাইড স্পিরিট নিয়ে আসেন। তারপর তারা বেশ কিছুক্ষণ বাসনার ঘরে অবস্থান করেন। কিছুক্ষণ পরে মাসুদ ডাক চিৎকার শুরু করেন। তার ডাক চিৎকারে আশেপাশের যৌনকর্মীরা বাসনার ঘরের কাছে ছুটে আসেন। তারা এসে বাসনাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তারা মাসুদকে ঘরের বাহিরে এনে হাত-পা বেঁধে মারধর করেন। ঘরের মালিক টাঙ্গাইল সদর থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ অভিযুক্ত মাসুদকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তানবীর আহাম্মেদ মুঠোফোনে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটি আত্মহত্যার ঘটনা। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। বর্তমানে তদন্ত চলমান রয়েছে।
তিনি আরও জানান, বাসনা আক্তারের কথিত প্রেমিক মাসুদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।