সারা দেশে সরকারি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা পদবী পরিবর্তনের দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেছে। এ আন্দোলন চলবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। গত সোমবার থেকে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির (বাকাসস) ডাকে টাঙ্গাইল জেলার সরকারি কর্মচারীরাও এ কর্মবিরতিতে অংশ নেন। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছে দুরদুরান্ত থেকে সেবা নিতে আসা সেবা গ্রহীতারা। কষ্ট করে আসলেও কর্মবিরতির কারণে তারা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না। ফলে ভোগান্তীর শিকার হচ্ছে মানুষ।
আন্দোলনকারীরা জানান, ২০০১ সাল থেকে কালেক্টরেটে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের পদবী পরিবর্তন এবং বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী এ পদবী পরিবর্তন সংক্রান্ত সার সংক্ষেপ অনুমোদন দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এর প্রেক্ষিতে সারা দেশের ন্যায় টাঙ্গাইলেও ২৫ তারিখ থেকে শুরু হওয়া ২৭ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত আন্দোলনের এ কর্মসূচি দিয়েছেন তারা।
শহরের আকুর টাকুর পাড়া এলাকার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শহরের লৌহজং নদী উদ্ধারের কাজ চলছে। আমিও নদীর পাড়ের মানুষ। যে জায়গায় ভাঙচুর করা হচ্ছে সেই জায়গায় আমার জমিও পড়েছে। সেই বিষয়ে নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে কথা বলতে এসেছিলাম। কিন্তু কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে কথা বলতে পারছি না। আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
হালিমা বেগম বলেন, আমি খুব গরীব মানুষ। ডিসি স্যারের কাছে এসেছিলাম কথা বলতে। কিন্তু কয়েক ঘন্টা দাড়িয়ে থেকেও তার সাথে কোন কথা বলতে পারলাম না।
ঢাকা থেকে আসা এক সেবা গ্রহীতা রুমা আক্তার বলেন, জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে কথা বলা আমার খুব প্রয়োজন। কিন্তু এখানে এসে দেখি আন্দোলন চলমান। আমি কি চলে যাবো না কি করবো সঠিক বুঝতে পারছি না। তাদের আন্দোলনের কারণে আমাদের কেন ভোগান্তি পোহাতে হবে।
আন্দোলনকারী বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির (বাকাসস) টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোতালেব সিদ্দিকী ও সাংগঠনিক সম্পাদক কবির হোসেন বলেন, গত দেড় যুগে একাধিকবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব কমিটির মাধ্যমে একাধিকবার আশ্বাস দিলেও এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি। সারা বাংলাদেশে ৫০টি ডিপার্টমেন্টের পদ পদবী পরিবর্তন করা হয়েছে। সেখানে কোন প্রকার কমিটি লাগেনি। আমাদের বেলায় কেন এতো তালবাহানা? আমাদের আন্দোলনের জন্য সাধারণ জনগনের ভোগান্তি হচ্ছে। আমরা মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার জন্য আসিনি। আমরা মানুষকে সেবা দিতে এসেছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, এটা তাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন। তাদের এ দাবিটি যৌক্তিক বলে আমি মনে করি। কিন্তু অনেক দূর থেকে অনেক সেবা প্রার্থীরা সেবা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। কারন আমাদের কার্যালয়ের যারা ফাইল ওয়ার্ক করেন তারা স্টাইক করেছেন। ফলে আমরা অস্বস্তিকর অবস্থায় রয়েছি।