নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তৈরি হওয়া দলীয় কোন্দল এখনো বয়ে চলেছে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনগুলো।
তারই ধারাবাহিকতায় একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পন করতে যাওয়ার সময় টাঙ্গাইল জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে।
এই সংঘর্ষে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের স্বামীর ওপরও হামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
আরো পড়ুন – স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলায় ছোটভাইকে হত্যা
এ ঘটনায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
জানা যায়, বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসিমা বাসেতের নেতৃত্বে একটি পক্ষ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মামুন অর রশিদের নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন করেন।
সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার ওরফে রুনু’র নেতৃত্বে অপরপক্ষ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া ছানোয়ার হোসেনের ঈগল প্রতীকের পক্ষে অবস্থান নেন।
এ নিয়ে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ “নৌকা লীগ” এবং “ঈগল লীগে” বিভক্ত হয়ে পড়ে।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী সভাপতি নাসিমা বাসেত তার অনুসারীদের নিয়ে সকাল আটটার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অবস্থান নেন।
এসময় সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তারের নেতৃত্বে অপরপক্ষ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ভেতরের কক্ষে অবস্থান নেন।
সভাপতি পক্ষের নেতারা সাধারণ সম্পাদক পক্ষের লোকদের সাথে নিয়ে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক দিতে যাবেন না বলে জানিয়ে দেয়।
তারা সাধারণ সম্পাদককে বলেন, যারা দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছেন, তাদের কোন কর্মসূচীতে সাথে নেবেন না।
এনিয়ে সকাল সাড়ে আটটার দিকে তর্কাতর্কি শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কথা –
সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার অভিযোগ করে বলেন, সভাপতি পক্ষের লোকজন প্রথমে তার ওপর হামলা করে।
এ দৃশ্য ফেরদৌসীর স্বামী মোশারফ হোসেন তার মুঠোফোনের ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করার সময় তার ওপরও হামলা হয়।
আরো পড়ুন – সাবেক কৃষিমন্ত্রীর আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে কৃষি জমি দখল ও মাটি ভরাটের অভিযোগ
এসময় মোশারফ হোসেনের পরনের পাঞ্জাবী ছিড়ে ফেলা হয় এবং তার মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়।
উভয়পক্ষের সংঘর্ষে ফেরদৌসী আক্তার ও তার স্বামী মোশারফ হোসেন ছাড়াও তাদের পক্ষের জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন কিবরিয়া এবং শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লাভলী তালুকদার হন।
ফেরদৌসী আক্তার আরো জানান, এ ঘটনা তিনি কেন্দ্রীয় এবং জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের জানিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, পরিকল্পিত ভাবে তাকে এবং তার স্বামী ও সমর্থকদের ওপর হামলা করা হয়েছে।
অপরদিকে এ ঘটনায় সভাপতির পক্ষের নেতা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমেনা বেগম আহত হন।
এসময় তার গলার সোনার চেইন ছিনতাই হয় বলে জানিয়েছেন সভাপতি নাসিমা বাসেত।
সভাপতি নাসিমা বাসেত বলেন, ফেরদৌসী দলের সাথে বেঈমানী করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীকের নির্বাচন করেছেন।
তাই তাকে আমরা আমাদের কর্মসূচীতে অংশ নিতে নিষেধ করেছি। সে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য এসেছিলো।
তার স্বামী মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচীতে সবসময় আসেন, এটা দলের কেউ পছন্দ করেন না।
পুলিশের বক্তব্য –
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লোকমান হোসেন বলেন, এই বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি।
আরো পড়ুন – মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা থেকে রেহাই পেলেন সাংবাদিক বাবু
অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।