আগামী ৪ জুন থেকে লন্ডন সফরকালে বাংলাদেশের অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধ জানিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। ওই সাক্ষাৎকারে টিউলিপ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ‘ভুল–বোঝাবুঝির’ ব্যাপারে ড. ইউনূসের সঙ্গে আলাপ করতে চান বলে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান বলছে, টিউলিপ প্রধান উপদেষ্টার কাছে লেখা এক চিঠিতে লন্ডন সফরকালে চলমান বিতর্ক নিয়ে আলোচনার সুযোগ চেয়েছেন। এই সফরে ড. ইউনূসের রাজা চার্লস ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে।
টিউলিপ চিঠিতে লিখেছেন, আমার মনে হয় ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশন যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করেছে তা দূর করতে একটি বৈঠক সহায়ক হবে। টিউলিপ লেখেন, ‘আমি একজন ব্রিটিশ নাগরিক, লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেছি এবং গত এক দশক ধরে সংসদে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছি। বাংলাদেশে আমার কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসায়িক স্বার্থ নেই। বাংলাদেশের প্রতি আমার হৃদয়ের টান আছে। কিন্তু এটা সেই দেশ নয়, যেখানে আমি জন্মেছি, বাস করেছি বা আমার ক্যারিয়ার গড়েছি।’
তার ভাষ্য, ‘আমি দুদককে বিষয়টি স্পষ্ট করতে চেয়েছি, কিন্তু তারা লন্ডনে আমার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আগ্রহ দেখায়নি এবং দৃশ্যত ঢাকার একটি ঠিকানায় চিঠিপত্র পাঠাচ্ছে। টিউলিপ আরও বলেন, ‘এই কাল্পনিক তদন্তের প্রতিটি পদক্ষেপ গণমাধ্যমকে জানানো হয়, তারপরও আমার আইনি দলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আমি জানি আপনি বুঝতে পারবেন, এই প্রতিবেদনগুলো যেন আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণ ও আমার দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের বিচ্যুতি না ঘটায়, তা নিশ্চিত করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে যা বলা হয় –
প্রভাবশালী পত্রিকা গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিউলিটের বিরুদ্ধে আওয়ামী সরকারের কাছ থেকে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ এনেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। টিউলিপকে নিয়ে গণমাধ্যমে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, টিউলিপ কিংবা তার মা ‘ক্ষমতা অপব্যবহার ও প্রভাব’ খাটিয়ে সাত হাজার ২০০ বর্গফুট জমি নিয়েছেন বলে দুদকের অভিযোগ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ববি হাজ্জাজের একাধিক দাবির ভিত্তিতে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের অবকাঠামো প্রকল্প থেকে কোটি কোটি পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক। তবে টিউলিপ দাবি করেছেন, তিনি তার খালার প্রতিপক্ষদের ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের’ লক্ষ্যবস্তু হচ্ছেন।
টিউলিপের চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ৫ জুন থেকে সরকারি ছুটির কারণে সরকারি অফিস বন্ধ থাকায় তারা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠিটি পাননি। তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার নির্দেশে জুলাই ও আগস্ট মাসে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু শেখ পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা কোনো অনুশোচনা দেখিনি।’ – ডেস্ক নিউজ