ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুর-ভাঙ্গা অংশ দ্রুত চার লেনে উন্নীত করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রবিবার (১৩ জুলাই) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ ২৮টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আলতাফ হোসেন, লেখক ও সাংবাদিক মফিজ ইমাম মিলন, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কাইয়ুম জঙ্গি, জামায়াতের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য অধ্যাপক আব্দুত তাওয়াবসহ অনেকে বক্তব্য দেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, “প্রাচীনতম জেলা ফরিদপুর দীর্ঘদিন ধরেই উন্নয়ন ও অবহেলার শিকার। উন্নয়নের প্রধান চাবিকাঠি হচ্ছে যোগাযোগব্যবস্থা, অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে আছে। প্রায় দুই সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে সড়কটি এখন প্রায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে।”
তারা জানান, সড়ক চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ থাকলেও এখনো কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। ভূমি অধিগ্রহণের জন্য শত কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও এখনও ১ শতাংশ জমিও অধিগ্রহণ হয়নি। বক্তারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন তোলেন—ভূমি অধিগ্রহণের সেই অর্থ কোথায় এবং কেন কাজ শুরু হচ্ছে না?
চার লেন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মাহামুদুল হাসান খালিদ বলেন, “আগামী সাত দিনের মধ্যে সড়ক চার লেনে উন্নয়নের দৃশ্যমান কাজ শুরু না হলে ২৩ জুলাই ফরিদপুর-ভাঙ্গা মহাসড়ক অবরোধ করা হবে।”
সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ফরিদপুর-ভাঙ্গা অংশে ৩২ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে, যা পদ্মা সেতু হয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২০টি জেলার মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫০ কোটি, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩০০ কোটি ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৫০ কোটি টাকা জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হলেও জটিলতায় কাজ শুরু হয়নি।
ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার জানান, “জমি অধিগ্রহণের অর্থ জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হলেও নানা জটিলতার কারণে প্রক্রিয়া পিছিয়ে গেছে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত রয়েছে।”
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রামানন্দ পাল বলেছেন, “আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ করার চেষ্টা চলছে।”