ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দীর্ঘ দেড় দশক ক্ষমতায় থাকা সরকারের পতনের আট মাস পেরিয়ে গেলেও দেশে ফেরেননি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় অনেকে আশা করেছিলেন, তিনি মায়ের সঙ্গে দেশে ফিরবেন। তবে ৬ মে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার দুই পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান ফিরলেও তারেক রহমান ফিরছেন না।
তারেক রহমানের দেশে না ফেরা ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে—এটা কি কেবল আইনি জটিলতা, নাকি রয়েছে অন্য কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা?
বিএনপির অবস্থান কী?
বিএনপি নেতারা বলছেন, তারেক রহমান দেশে ফিরবেন সম্পূর্ণ আইনি প্রক্রিয়া মেনে। মামলাগুলো নিষ্পত্তি হলে তিনি মাতৃভূমিতে ফিরবেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “আইনের শাসন ছাড়া গণতন্ত্র টেকে না। তারেক রহমান আইনি প্রক্রিয়াতেই ফিরবেন। সরকার যদি হঠাৎ সব মামলা তুলে নেয়, তাহলে সেটি আইনের শাসনের মধ্যে পড়ে না।”
বিএনপির অপর স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদও আশা প্রকাশ করে বলেন, “তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন।”
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, “তারেক রহমানের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোর কিছু এখনো বিচারাধীন। দেশে ও লন্ডনে—দুই জায়গাতেই আইনি প্রক্রিয়া চলছে। আমরা তার অপেক্ষায় আছি।”
আইনি জটিলতা কোথায়?
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে দায়ের হওয়া দুর্নীতির একটি মামলায় ২০২৩ সালের আগস্টে তারেক রহমানকে ৯ বছর এবং তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার একটি আদালত। পরে জুবাইদা রহমানের দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়। তবে তারেক রহমানের সাজা বহাল রয়েছে।
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও তারেক রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, “তারেক রহমান ও জিয়া পরিবার দেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা আশা করি, সব মামলা ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী নিষ্পত্তি হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আইনি জটিলতা ছাড়াও রাজনৈতিক বাস্তবতা ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কিছু হিসাব-নিকাশ তারেক রহমানের দেশে ফেরার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে বলেও ধারণা রয়েছে।