ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার খামারি সাজ্জাদ হোসেন সেতু কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ছয়টি গরু বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর আগে গত রোজার ঈদে ছয়টি গরু ভালো দামে বিক্রি করেন তিনি। কোরবানির গরু লালনের পাশাপাশি সাজ্জাদ এআই (কৃত্রিম প্রজনন) কর্মী হিসেবে প্রতি মাসে ১৫০ থেকে ২০০টি প্রজনন সম্পন্ন করেন। তার এই উদ্যোগে স্থানীয় তরুণ ও নারীরা গরু পালনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
স্থানীয় বাজারে দুই থেকে পাঁচ মণ ওজনের গরু ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। খামারিরা বলছেন, পশুখাদ্যের দাম কমানো, উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ এবং আর্থিক সহায়তা পেলে দেশীয় খামারিরাই কোরবানির চাহিদা পূরণে সক্ষম।
দেশে এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে এক কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজারের বেশি পশু, যার ৭০ শতাংশ জোগান দেবে রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগ। শুধু রাজশাহী থেকেই আসবে ৩৫ শতাংশ পশু। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, কোরবানির পশু বিক্রি থেকে এবছর প্রায় ৬৭ হাজার কোটি টাকা এবং অনলাইন বিক্রি থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আসবে। মোট অর্থনীতি ছাড়াতে পারে এক লাখ কোটি টাকা।
২০১৪ সালে ভারত থেকে গরু রপ্তানি বন্ধের পর দেশীয় খামারিরা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানায়, এবছর দেশে প্রায় ৫৫ লাখ কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ১৭ লাখ বাছুর উৎপাদন হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “দেশীয় পশুতেই এবারের কোরবানি সম্ভব। পশুর নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উন্নত বীজ, বিজ্ঞানসম্মত মোটাতাজাকরণ এবং প্রশিক্ষিত এআই কর্মী থাকলে পশু উৎপাদনে দেশ আরও স্বনির্ভর হবে।