দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পর কোনো গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিবিসি বাংলার সঙ্গে তাঁর এই একান্ত সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর)। এতে তিনি সংস্কার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন ও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন,
“এটি রাজনৈতিক বিষয়, ব্যক্তিগত নয়। আমরা চাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সফল হোক। তাদের মূল দায়িত্ব হলো সংস্কার সম্পন্ন করা এবং একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা। তারা যদি সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।”
তিনি আরও বলেন, সরকারের কার্যক্রম ভালো বা খারাপ—সেই ফলাফলের ওপরই রাজনৈতিক সম্পর্কের উষ্ণতা বা শীতলতা নির্ভর করবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হওয়ার প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, আমি যখন সেই বক্তব্যটি দিয়েছিলাম, তখন নির্বাচন নিয়ে স্পষ্ট কোনো অবস্থান নেওয়া হয়নি। তাই শুধু আমার নয়, অনেকের মনেই সন্দেহ ছিল। তবে সরকারের রোডম্যাপ ঘোষণার পর এবং প্রধান উপদেষ্টার দৃঢ় সিদ্ধান্তের কারণে সেই সন্দেহ অনেকটাই কেটে গেছে।”
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক নিয়ে তিনি জানান, “সৌজন্যমূলক আলোচনা হয়েছে। উনি জানতে চেয়েছিলেন, জনগণ সুযোগ দিলে আমরা কী পদক্ষেপ নেব। আমি দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে কিছু পরিকল্পনা শেয়ার করেছি।”
এক-এগারোর সেনাসমর্থিত সরকার সম্পর্কে তারেক রহমান বলেন, এক বাক্যে বলতে গেলে এটি ছিল একটি অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সরকার। তারা দেশের রাজনীতি ধ্বংস করতে চেয়েছিল, দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে চেয়েছিল।”
কূটনীতি ও পররাষ্ট্রনীতিতে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিএনপির মূলনীতি একটাই—সবার আগে বাংলাদেশ। জনগণ, দেশ ও সার্বভৌমত্বই আমাদের অগ্রাধিকার।”
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের দেশের মানুষের স্বার্থকে প্রাধান্য দেব। আমি আমার পানির হিস্যা চাই, আরেক ফেলানির মতো ঘটনা দেখতে চাই না। দেশের মানুষের ওপর আঘাত এলে আমরা তা মেনে নেব না।”
সাম্প্রতিক বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন,
“যদি কেউ স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরাগভাজন হয়, সেটি তাদের সিদ্ধান্ত। আমাদের দায়িত্ব বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকা।”