কক্সবাজারের মহেশখালীতে নির্মাণাধীন মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে বড় অগ্রগতি আসছে। বন্দর নির্মাণের প্রথম পর্যায়ে দুটি জেটি নির্মাণে আগামী ২২ এপ্রিল চুক্তি করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জাপানের দুটি প্রতিষ্ঠান — পেন্টা ওশান এবং থোয়া করপোরেশন। রাজধানী ঢাকায় চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের প্রথম ধাপে ছয় হাজার ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ একটি কনটেইনার জেটি এবং ৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি মাল্টিপারপাস জেটি নির্মাণ করা হবে। পুরো অর্থ জোগান দেবে জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। নির্মাণের মেয়াদ নির্ধারিত হয়েছে ২০২৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের মোট আয়তন এক হাজার ৩১ একর। এর মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা। ২০২০ সালের মার্চে প্রকল্পটি অনুমোদন পায় এবং ২০২৬ সালের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২০২৯ সালের ডিসেম্বরে নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৪.৫ মিটার গভীর কৃত্রিম নৌচ্যানেল ও সাগরে ব্রেকওয়াটার (সুরক্ষা বাঁধ) নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বড় আকারের কার্গো জাহাজ সেখানে ভিড়ছে। তবে মূল বন্দরের নির্মাণকাজ বারবার পিছিয়েছে নানা জটিলতায়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, “জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগামী ২২ এপ্রিল চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চুক্তিটি সম্পূর্ণ জাইকার অর্থায়নে হবে এবং তারা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবে, যা বেশিরভাগই দেশের বাইরে তৈরি করে দেশে এনে বসানো হবে। ফলে কাজ দ্রুত শেষ হওয়ার আশা করছি।”
নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এর আগে জানান, ২০২৯ সালের মধ্যে প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপের কাজ শেষ হবে। এরপর ২০৩০ সাল থেকে বড় আকারের মাদার ভেসেল নিয়মিতভাবে এই বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়া করতে পারবে।
উল্লেখ্য, সম্পূর্ণ চালু হলে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর বছরে ১১ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করতে পারবে, যা ২০৪১ সালের মধ্যে বেড়ে দাঁড়াবে ২৬ লাখে। এতে দেশের বন্দর সক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি পণ্যের পরিবহন খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।