নাগরপুর প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের নাগরপুরে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা প্রশাসন দিবসটি উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
উপজেলা চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন করেন।
শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত-ই-জাহান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাল হোসেন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সুজায়েত হোসেনসহ অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর বাংলার সূর্য সন্তানরা পাকিস্তানি বাহিনীর কবল থেকে নাগরপুর উপজেলাকে মুক্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে।
নাগরপুরের মানুষ মুক্তির স্বাদ পায়। টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতার এই খবর দেশের সীমানা পেরিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল।
উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করে।
স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে মুক্তিবাহিনীর বাইরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পৃথক বাহিনী গড়ে উঠে।
এর মধ্যে টাঙ্গাইলের কাদেরিয়া বাহিনী ও বাতেন বাহিনী অন্যতম। কাদেরিয়া বাহিনীর বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
কাদেরিয়া বাহিনী ও বাতেন বাহিনী যুদ্ধের শুরু থেকে টাঙ্গাইলসহ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় যুদ্ধে অংশ নেয়।
সারা দেশের মতো হানাদারদের দ্বারা ক্ষত-বিক্ষত টাঙ্গাইলের সর্ব দক্ষিণে ধলেশ্বরী নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন নাগরপুরকে শত্রুমুক্ত করতে কাদেরিয়া বাহিনী ও বাতেন বাহিনী বেশ কয়েকবার আক্রমণ করলেও চূড়ান্ত সফলতা পেতে সময় লাগে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর উপজেলার কেদারপুরে প্রায় চার হাজার মুক্তিযোদ্ধা নাগরপুর থানা আক্রমণের জন্য সমবেত হয়।
খবর পেয়ে হানাদার বাহিনীর দুটি যুদ্ধ বিমান নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ করে তাদের এ পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয়।
পিছু হটে মুক্তিবাহিনী। পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করে নাগরপুর থানা দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে।
অবশেষে ৯ ডিসেম্বর কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার হুমায়ুন বাঙ্গাল, রবিউল আলম, সাইদুর রহমান, সবুর খান ও বাতেন বাহিনীর কয়েকটি কোম্পানির যৌথ আক্রমণে পাক হানাদারদের বেশ কয়েকটি ট্যাংক ধ্বংস করে।
এই যুদ্ধে বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত পাক সেনা নিয়ে হানাদার বাহিনী নাগরপুর ছেড়ে পালিয়ে যায়।
নাগরপুর থানা স্থায়ীভাবে হানাদার মুক্ত হয়। সেদিন নাগরপুরবাসী ৯ মাসের দুঃখ বেদনা মুহূর্তেই ভুলে সমস্বরে জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত করে। সম্পাদনা – অলক কুমার