সখীপুর সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নে ভূমি অফিসে নায়েবের চেয়ারে বসে দাপ্তরিক কাজ সম্পাদন করছেন স্থানীয় এক যুবক।
এতে করে একদিকে যেমন সরকারি গোপন তথ্য ফাঁসের ঝুঁকিতে পরেছে অন্যদিকে ওই ভূমি অফিসে সংঘটিত হচ্ছে নানান দুর্নীতি।
নায়েবের পরিবর্তে দাপ্তরিক কার্য সম্পাদনকারী ওই যুবক হলো শুভ ভৌমিক। তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা।
আরো পড়ুন – টাঙ্গাইলে সেতু এনজিও’র সহকারী হিসাবরক্ষকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ
এ ছাড়া নায়েব নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ছাড়াও বহুবিধ অনিয়ম দুর্নীতিরও অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে নায়েব নুরুল ইসলাম অফিসে পাওয়া যায় নাই।
তার অবর্তমানে স্থানীয় যুবক তার চেয়ারে বসে কম্পিউটারে কাজ করছেন। অন্যপাশে নুরুল ইসলামের এক সহকর্মী কাজে ব্যস্ত।
স্থানীয়রা বলেন, সামান্য ভুল থাকলেও জমির মালিকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেন নায়েব নুরুল ইসলাম।
আবার কেউ অর্থ দিয়ে জমির খারিজ করে নেন। এতে জমির মালিকদের মধ্য বিবাদ সৃষ্টি হচ্ছে।
জমির ওয়ারিশদের মধ্যে অর্থের বিনিময়ে কাজ করেন তিনি। কেউ টাকা না দিলে তিনি কোনো কাজই করেন না এবং কাগজপত্র তালাবদ্ধ করে রেখে দেন।
দৃশ্যটা এমন যে, এই ভূমি অফিসের চৌকাঠ পার হলেই সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে ভূমি কর্মকর্তা নুরুলের নিজের তৈরি করা আইন মানতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, তিনি সরাসরি জমির নামজারি করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন।
সব কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও অনেক আগের মালিকদের ওয়ারিশ সনদ এনে দিতে বলা হয়। যার কারণে কাজটি হয়নি।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, প্রতিটি ফাইলে নায়েবকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়।
সেবা নিতে আসা বেশ কয়েকজন সেবাগ্রহিতা বলেন, অফিসে কে নায়েব? নুরুল না স্থানীয় যুবক শুভ? তাই তো ভালো করে জানি না।
আরো পড়ুন – যে কোন মূল্যে স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে এ ঐক্য ধরে রাখতে হবে
যে কয়েকদিন অফিসে এসেছি, একই চেয়ারে একদিন নুরুলকে বসতে দেখি, আবার আরেক দিন স্থানীয় যুবককে বসতে দেখি।
স্থানীয় ওই যুবকের বক্তব্য –
ভূমি অফিসের কাজ করা ওই যুবক শুভ ভৌমিক বলেন, আমি দুই বছর ধরে এ অফিসে কাজ করছি। নায়েবের অনুপস্থিত বা উপস্থিতিতে আমি বিভিন্ন কাজ করে থাকি।
অফিস সহায়ক জুলফিকার আলী বলেন, নায়েবের টাঙ্গাইলে বাসা রয়েছে এটুকু জানি। তবে বিস্তারিত কিছু জানি না।
তিনি ওই খান থেকে এসে এখানে অফিস করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আমি জানি না।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হোসেন পাটওয়ারী জানান, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যদি ওই যুবক সেখানে কাজ করে থাকেন, তাহলে দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।