রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে গত এক বছরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা। অধিকাংশ রিকশা সাধারণ কাঠামোয় ব্যাটারি সংযোজন করে তৈরি হওয়ায় এর ব্রেকিং সিস্টেম দুর্বল এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে কয়েকগুণ।
অদক্ষ চালক, যত্রতত্র পার্কিং ও এলোমেলো চলাচলের কারণে এই যান এখন সড়ক বিশৃঙ্খলার বড় উৎসে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। এ বছরের প্রতিপাদ্য— ‘মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপদ গতি, কমবে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি।’
দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিবন্ধনের কোনো আইনগত সুযোগ নেই, ফলে এর সঠিক পরিসংখ্যানও সরকারের কাছে নেই। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংসদে জানান, দেশে প্রায় ৪০ লাখ ইজিবাইক ও ব্যাটারি রিকশা চলছে। এখন এই সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে মনে করেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
বুয়েটের গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, “ব্যাটারি রিকশা ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থায় চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে। প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে, বরং দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।”
ট্রাফিক পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ব্যাটারি রিকশা প্রধান সড়কে হঠাৎ গতি পরিবর্তন করে, উল্টো পথে চলে এবং ভুল লেনে প্রবেশ করে, যার ফলে দুর্ঘটনা বেড়ে চলছে।
বিআরটিএ’র তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে ব্যাটারিচালিত রিকশা দুর্ঘটনায় আটজন, অটোরিকশায় ৩৯ জন এবং ইজিবাইকে আরও আটজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক।
এ পরিস্থিতিতে সরকার বিকল্প হিসেবে নিরাপদ ও আধুনিক মোটরাইজড রিকশা চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি জানান, “বুয়েটের সহযোগিতায় নতুন সেফ মোটরাইজড রিকশার ডিজাইন তৈরি হয়েছে, যা ভবিষ্যতে ঢাকায় নিবন্ধনের আওতায় আনা হতে পারে।”