শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের দক্ষিণ প্রান্ত সংলগ্ন রক্ষা বাঁধে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় মঙ্গল মাঝি ও সাত্তার মাদবর ঘাটসংলগ্ন প্রায় ১০০ মিটার বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ফলে নদীভাঙনের হুমকিতে পড়েছে অন্তত ছয় শতাধিক পরিবার ও শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অন্তত ১০টি দোকানঘর ইতোমধ্যেই সরিয়ে নিতে হয়েছে। গত দুই সপ্তাহের একটানা ভাঙনে প্রায় ৬০০ মিটার বাঁধ নদীতে হারিয়ে গেছে। এতে ৩৩টি দোকান ও ১৫টি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে প্রায় ৫০টি বসতবাড়ি, তিনটি গ্রামের ৬০০টির বেশি পরিবার ও ঘাট-বাজার এলাকার প্রায় ২৪০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এ ভাঙন শুরু হয়। সর্বশেষ ২০২৫ সালের ৭, ৯ ও ২৩ জুলাই কয়েক ধাপে ভাঙন ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আপাতত প্রায় ৫০০ মিটার এলাকাজুড়ে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৩২ হাজারেরও বেশি জিও ব্যাগ ফেলা হলেও স্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।
স্থানীয় মুদি দোকানি ইস্কান্দার মোল্লা বলেন, ‘বাঁধ থাকার কারণে এতদিন আমরা নির্ভয়ে ব্যবসা করেছি। এখন প্রতিদিন ভাঙনের খবর শুনে আতঙ্কে থাকি। ইতোমধ্যে ১০টি দোকান সরিয়ে নিতে হয়েছে, আরও দোকান সরাতে হবে।’
জাজিরা উপজেলার ইউএনও কাবেরী রায় জানান, ‘বাঁধটি পুরনো হওয়ায় ভাঙন ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত দোকান ও বসতবাড়ি সরিয়ে নিতে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।’
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান জানান, নদীতে প্রবল স্রোত ও পানির চাপের কারণে ভাঙন দেখা দিচ্ছে। জিও ব্যাগ ফেলে তা সাময়িকভাবে ঠেকানোর চেষ্টা চলছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য নতুন একটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা তৈরি হয়েছে।
এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, প্রতিবছরই নদীভাঙন হলেও স্থায়ী সমাধান নেই। ভাঙন চলতে থাকলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও হুমকিতে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।