পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বেলুয়া নদীতে বছরের এই সময়ে বসে দেশের সবচেয়ে ব্যতিক্রমী তরমুজের ভাসমান হাট। প্রতি শনি ও মঙ্গলবার, ভোরের আলো ফুটতেই বৈঠাকাটা বাজারসংলগ্ন নদীর বুকে জমে ওঠে এই হাট। মার্চ-এপ্রিলজুড়ে চলে বেচাকেনা, যার আর্থিক পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় শত কোটি টাকা।
নাজিরপুর সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরের এই হাটে ঢাকাসহ খুলনা, যশোর, নরসিংদী ও রাজশাহী অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা তরমুজ কিনতে আসেন। স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত তরমুজ পাইকারি বিক্রির জন্য বড় ট্রলারভর্তি করে নিয়ে আসা হয় হাটে। অনেকে আবার ট্রলার পাঠিয়ে লেবার দিয়ে তরমুজ বিক্রি করান।
হাটের ব্যবসায়ীরা জানান, বড় আকারের ১০০ তরমুজের দাম ২৫-৩০ হাজার, মাঝারি আকারের ২০-২২ হাজার এবং ছোট তরমুজ ৫-১২ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। খরচ কম, লাভ বেশি হওয়ায় এই হাট দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ব্যবসায়ী ও কৃষকরা জানাচ্ছেন, এবারের ফলন ভালো হওয়ায় চাহিদাও বেড়েছে। তবে বৈঠাকাটার সঙ্গে নাজিরপুরের সড়ক যোগাযোগ খারাপ থাকায় কিছুটা ভোগান্তির কথাও বলেছেন বিক্রেতারা।
খুলনার ব্যবসায়ী মোতাহার আলী জানান, এবার একাই প্রায় ৫ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। হাট কমিটির সদস্য ও স্থানীয় চেয়ারম্যানরা বলছেন, একশ বছরের পুরনো এই বাজার এখন কৃষিপণ্যের বড় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। খাজনা কম হওয়ায় ব্যবসায়ীদের আগ্রহও বেশি।
ভাসমান হাট শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক দিক থেকেও এলাকায় এক বিশেষ পরিচয় বহন করছে।