ভারী বৃষ্টি ও ভারতের ঢলের কারণে কুড়িগ্রামের কালজানী নদীতে হাজার হাজার গাছের গুঁড়ি ভেসে এসেছে। এসব গাছের বেশির ভাগই বাকল ও শিকড়বিহীন, রং লালচে হওয়ায় অনেকেই এগুলো ‘লাল চন্দন’ বলে চড়া দামে বিক্রি করছেন।
গত রোববার বিকেল থেকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ঢলডাঙা ও শালঝোড় এলাকায় এই কাঠ ভেসে আসতে শুরু করে। পরদিন সোমবার এগুলো কালজানী নদীর ভাটিতে দুধকুমার হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে পৌঁছায়। ভূরুঙ্গামারী, নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর ও চিলমারীর শত শত মানুষ নৌকা, বাঁশের ভেলা ও টায়ার টিউব নিয়ে এগুলো সংগ্রহ করতে নেমে পড়ে। নদীর পাড়ে অস্থায়ী হাট গড়ে উঠে কাঠ বিক্রির জন্য।
নাগেশ্বরী উপজেলার দামালগ্রাম এলাকায় একেকটি গাছের গুঁড়ি ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রায়গঞ্জ ইউনিয়নের একটি বড় লালচে গুঁড়ির দাম ধরা হয়েছে দেড় লাখ টাকা। তবে স্থানীয়রা বলেছেন, ৫০ ফুটের লম্বা একটি গুঁড়ি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে।
কাঠের প্রকৃত রং এবং বৈশিষ্ট্য নিয়ে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ মীর্জা মো. নাসির উদ্দিন জানান, কাঠে থাকা ট্যানিন ও ফেনলিক যৌগ দীর্ঘদিন পানিতে ভিজে থাকলে বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে লালচে বা বাদামি রং ধারণ করে। ফলে সাধারণ কাঠও চন্দন কাঠের মতো রঙ ধারণ করে, কিন্তু এতে চন্দনের কোনো বৈশিষ্ট্য বা গন্ধ নেই।
কুড়িগ্রাম জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাদিকুর রহমানও নিশ্চিত করেছেন, কাঠগুলো প্রকৃত চন্দন নয় এবং শ্বেত বা রক্তচন্দনের কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি।