বঙ্গোপসাগরে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও মায়ানমার উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করলেও বাংলাদেশ এখনও কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারেনি। দেড় দশক ধরে সমুদ্রাঞ্চলে অনুসন্ধানে ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে দেশ। সমুদ্রসীমা বিজয়ের এক যুগ অতিক্রান্ত হলেও বঙ্গোপসাগরে এখনও কোনো তেল বা গ্যাস খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি চীনের সহযোগিতায় পাকিস্তান আরব সাগরের তলদেশে যৌথ সমীক্ষায় বিপুল গ্যাস মজুদ আবিষ্কার করেছে। একইভাবে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল থেকে গভীর সমুদ্রে তেল ও গ্যাস খনিজ পাওয়া গেছে, যা ভারতের জ্বালানি উত্তোলন ও আমদানিতে বড় প্রভাব ফেলবে। মায়ানমারও সমুদ্রসীমা নির্ধারনের পর থেকে বিপুল গ্যাস উত্তোলন করে চীনসহ অন্যান্য দেশে রফতানি করছে।
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছিল। বিশ্বজুড়ে ৫৫টি শীর্ষ পর্যায়ের কোম্পানিকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হলেও কোনো বিদেশি কোম্পানি শেষ পর্যন্ত দরপত্র জমা দেয়নি। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অংশে ২৬টি ব্লক রয়েছে, যেখানে কয়েকটি ব্লকে অগভীর ও গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান করা হয়েছে। তবে বিদেশি কোম্পানির অংশগ্রহণ না থাকায় কার্যকর খনন হয়নি।
পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি) মো. শোয়েব জানান, দরপত্রে অংশ না নেওয়ার কারণগুলো রিভিউ করা হয়েছে এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পর্যালোচনা শেষে দ্রুত নতুন দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে। জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামও জানান, বিদেশি কোম্পানির শর্তাবলী ও শেয়ারিং সমস্যার সমাধান করে এ বছরের মধ্যেই দরপত্র পুনরায় আহ্বান করা হবে।
বাংলাদেশের ভূতত্ত্ববিদ বদরুল ইমাম মনে করেন, বিদেশি কোম্পানির আগ্রহ বাড়াতে দ্রুত দরপত্র আহ্বান করে সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করা অপরিহার্য।