এবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘করোনা সেন্টারে’ চিকিৎসা সেবাদানকারী চিকিৎসকদের নকল এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বিষয়টি জানিয়েছেন একাধিক চিকিৎসক। তবে তাদের কেউই নাম প্রকাশে রাজি হননি।
গত ২৪ জুন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কোভিড-১৯ সংক্রমিতদের চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়।
৩৭০ শয্যার এই সেন্টারে ভর্তি রোগীদের জন্য একেকটি গ্রুপে ৪৫ জন আবাসিক চিকিৎসক থাকেন। তাদের প্রত্যেককে দায়িত্ব শুরু করার আগেই সাতদিন ব্যবহারের জন্য পাঁচটি করে মাস্ক দেওয়া হয়।
করোনা সেন্টারে দায়িত্ব পালনকারী একজন চিকিৎসক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২৪ জুন কাজ শুরু করার পর প্রথম দুটি দলকে যে মাস্ক দেওয়া হয়, তাতে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু ১৮ জুলাই তৃতীয় পালায় দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া চিকিৎসকদের দেওয়া মাস্কের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
নকল এন-৯৫ মাস্ক
“মাস্কে ইংরেজিতে ২৩টির মতো বানান রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি বানানই ভুল। ব্যবহার করার সময় মাস্কের ফিতা ছিঁড়ে যাচ্ছে। মাস্কের ভেতরের অংশও আসল মাস্কের মতো না। আমেরিকায় তৈরি মাস্কে তো ইংরেজি বানান ভুল থাকার কথা না। বানান ভুল দেখে সবাই সন্দেহ করছে নকল মাস্ক। এছাড়া মাস্কের ভেতরের বিভিন্ন অংশ দেখেও মাস্কের মানের বিষয়টি কিছুটা অনুমান করা যায়।”
ওই চিকিৎসক বলেন, “এটা দেখার পর সবাই অভিযোগ করেছে পরিচালকের কাছে। তিনি তা পরিবর্তন করে আবার নতুন মাস্ক দিয়েছেন। সেগুলো পরিবর্তন করে আবার কিছু মাস্ক দিয়েছেন। এগুলোতেও সমস্যা আছে, আসল এন-৯৫ মাস্ক না।”
আরেকজন চিকিৎসক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“আসল এন-৯৫ মাস্কে লগ নম্বর থাকে, কিন্তু এই মাস্কে নেই। আসল এন-৯৫ মাস্কের সিলও এই মাস্কে নেই। মাস্কগুলোর রং আসল মাস্কের রংয়ের সঙ্গে মেলে না।
“আমরা বিষয়টি স্যারদের জানিয়েছি। তারা বলেছেন, ঘটনা এই হয়ে থাকলে মাস্কগুলো খারাপ আছে। পরবর্তীতে ভিসি স্যারসহ অন্যরা এটা পরিবর্তন করে দেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু সোমবারও নতুন আসল মাস্ক দেওয়া হয়নি। আমাদের অনেকে এই মাস্ক ব্যবহার করছে। কেউ কেউ নিজের উদ্যোগে আসল মাস্ক কিনে নিয়েছে।”
নকল মাস্কের কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমিতদের চিকিৎসা দিতে আসা চিকিৎসকরা ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
আসল এন-৯৫ মাস্ক
এক চিকিৎসক বলেন, “সুরক্ষা সামগ্রীর মধ্যে এটার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। মাস্ক হচ্ছে একজন চিকিৎসকের সুরক্ষার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। আমেরিকান এন-৯৫ মাস্ক ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত নিরাপত্তা দিতে পারে জীবাণু থেকে। এখন এই মাস্কই যদি নকল হয়, তাহলে তো এটা কোনো সুরক্ষা দেবে না।”
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. জুলফিকার আহমেদ আমিনের মোবাইলে সোমবার একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস পাঠালেও সাড়া দেননি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার মোবাইলে কল দিলে তিনিও ফোন ধরেননি।
ফলে এসব মাস্ক কোন দেশে তৈরি, কোন প্রতিষ্ঠান কীভাবে এসব মাস্ক সরবরাহ করেছে, সেসব প্রশ্নের উত্তর জানা যায়নি।
মাস্ককাণ্ড ‘ভুল করে’, দায়মুক্তি চায় জেএমআই
মাস্ক কাণ্ডের প্রতিবেদন ১২ দিনেও ‘দেখেননি’ মন্ত্রী
মাস্ক কেলেঙ্কারি: সিএমএসডির ৩ কর্মকর্তাকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর মার্চের শেষ দিকে জেএমআই নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মুগদা জেনারেল হাসপাতালে সরবরাহ করা এন-৯৫ মাস্কের প্যাকেটে সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক থাকায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ওই মাস্কের মান সম্পর্কে জানতে চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালককে চিঠি দেন।
বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদ উল্লাহ ২ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্রিফিংয়ে স্বীকার করেন, ওই মাস্ক সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক ছিল। প্যাকেটের গায়ে জন্য এন-৯৫ লেখা হয়েছিল ‘ভুল করে’।
এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরেও বিষয়টি আসার পর বাক্সের গায়ে এক এবং ভেতরে আরেক ধরনের মাস্ক থাকা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন।
বিষয়টি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশনও।
এরপর ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। কমিটি ২৮ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেও তা প্রকাশ করেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘করোনা সেন্টারে’ চিকিৎসা সেবাদানকারী চিকিৎসকদের নকল এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বিষয়টি জানিয়েছেন একাধিক চিকিৎসক। তবে তাদের কেউই নাম প্রকাশে রাজি হননি।
গত ২৪ জুন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কোভিড-১৯ সংক্রমিতদের চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়।
৩৭০ শয্যার এই সেন্টারে ভর্তি রোগীদের জন্য একেকটি গ্রুপে ৪৫ জন আবাসিক চিকিৎসক থাকেন। তাদের প্রত্যেককে দায়িত্ব শুরু করার আগেই সাতদিন ব্যবহারের জন্য পাঁচটি করে মাস্ক দেওয়া হয়।
করোনা সেন্টারে দায়িত্ব পালনকারী একজন চিকিৎসক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২৪ জুন কাজ শুরু করার পর প্রথম দুটি দলকে যে মাস্ক দেওয়া হয়, তাতে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু ১৮ জুলাই তৃতীয় পালায় দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া চিকিৎসকদের দেওয়া মাস্কের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
নকল এন-৯৫ মাস্ক
“মাস্কে ইংরেজিতে ২৩টির মতো বানান রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি বানানই ভুল। ব্যবহার করার সময় মাস্কের ফিতা ছিঁড়ে যাচ্ছে। মাস্কের ভেতরের অংশও আসল মাস্কের মতো না। আমেরিকায় তৈরি মাস্কে তো ইংরেজি বানান ভুল থাকার কথা না। বানান ভুল দেখে সবাই সন্দেহ করছে নকল মাস্ক। এছাড়া মাস্কের ভেতরের বিভিন্ন অংশ দেখেও মাস্কের মানের বিষয়টি কিছুটা অনুমান করা যায়।”
ওই চিকিৎসক বলেন, “এটা দেখার পর সবাই অভিযোগ করেছে পরিচালকের কাছে। তিনি তা পরিবর্তন করে আবার নতুন মাস্ক দিয়েছেন। সেগুলো পরিবর্তন করে আবার কিছু মাস্ক দিয়েছেন। এগুলোতেও সমস্যা আছে, আসল এন-৯৫ মাস্ক না।”
আরেকজন চিকিৎসক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“আসল এন-৯৫ মাস্কে লগ নম্বর থাকে, কিন্তু এই মাস্কে নেই। আসল এন-৯৫ মাস্কের সিলও এই মাস্কে নেই। মাস্কগুলোর রং আসল মাস্কের রংয়ের সঙ্গে মেলে না।
“আমরা বিষয়টি স্যারদের জানিয়েছি। তারা বলেছেন, ঘটনা এই হয়ে থাকলে মাস্কগুলো খারাপ আছে। পরবর্তীতে ভিসি স্যারসহ অন্যরা এটা পরিবর্তন করে দেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু সোমবারও নতুন আসল মাস্ক দেওয়া হয়নি। আমাদের অনেকে এই মাস্ক ব্যবহার করছে। কেউ কেউ নিজের উদ্যোগে আসল মাস্ক কিনে নিয়েছে।”
নকল মাস্কের কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমিতদের চিকিৎসা দিতে আসা চিকিৎসকরা ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
আসল এন-৯৫ মাস্ক
এক চিকিৎসক বলেন, “সুরক্ষা সামগ্রীর মধ্যে এটার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। মাস্ক হচ্ছে একজন চিকিৎসকের সুরক্ষার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। আমেরিকান এন-৯৫ মাস্ক ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত নিরাপত্তা দিতে পারে জীবাণু থেকে। এখন এই মাস্কই যদি নকল হয়, তাহলে তো এটা কোনো সুরক্ষা দেবে না।”
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. জুলফিকার আহমেদ আমিনের মোবাইলে সোমবার একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস পাঠালেও সাড়া দেননি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার মোবাইলে কল দিলে তিনিও ফোন ধরেননি।
ফলে এসব মাস্ক কোন দেশে তৈরি, কোন প্রতিষ্ঠান কীভাবে এসব মাস্ক সরবরাহ করেছে, সেসব প্রশ্নের উত্তর জানা যায়নি।
মাস্ককাণ্ড ‘ভুল করে’, দায়মুক্তি চায় জেএমআই
মাস্ক কাণ্ডের প্রতিবেদন ১২ দিনেও ‘দেখেননি’ মন্ত্রী
মাস্ক কেলেঙ্কারি: সিএমএসডির ৩ কর্মকর্তাকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর মার্চের শেষ দিকে জেএমআই নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মুগদা জেনারেল হাসপাতালে সরবরাহ করা এন-৯৫ মাস্কের প্যাকেটে সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক থাকায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ওই মাস্কের মান সম্পর্কে জানতে চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালককে চিঠি দেন।
বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদ উল্লাহ ২ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ব্রিফিংয়ে স্বীকার করেন, ওই মাস্ক সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক ছিল। প্যাকেটের গায়ে জন্য এন-৯৫ লেখা হয়েছিল ‘ভুল করে’।
এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরেও বিষয়টি আসার পর বাক্সের গায়ে এক এবং ভেতরে আরেক ধরনের মাস্ক থাকা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন।
বিষয়টি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশনও।
এরপর ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। কমিটি ২৮ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেও তা প্রকাশ করেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।