বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া’র চির বিদায়

কালিহাতী প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের কালিহাতীর নগরবাড়ী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক ইউপি সদস্য বাদশা মিয়া (৭৪) মারা গেছেন।

বুধবার দিবাগত রাত ২টার সময় বার্ধক্যজনিত কারণে নিজ বাড়ীতে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নইলাহি রাজিউন)।

নগরবাড়ী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে নামাজে জানাজা শেষে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বাদশা মিয়ার মৃত্যুতে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম তালুকদার; উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মিজানুর রহমান মজনু; নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শুকুর মামুদ; নারান্দিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মাসুদ তালুকদার; বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া ১৯৪৭ সালে ভূঞাপুর উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালে পরিবারের সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে যোগ দেন মুক্তিবাহিনীতে।

অদম্য সাহসী বাদশা মিয়া ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরা পাহাড় থেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

এরপর কাদেরীয়া বাহিনীর অধীনে ১১নং সেক্টরের নাগরপুর, মাটিকাটা, ফুলদহরপাড়া, লাউহাটীসহ একাধিক স্থানে ভয়াবহ সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন।

বাদশা মিয়া মূলত কাদের সিদ্দিকীর নির্দেশে ভারত থেকে গোলাবারুদ, হাতিয়ারসহ যুদ্ধের বিভিন্ন প্রকার সরঞ্জাম এনে কাদেরীয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের সরবরাহ করতেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে কাদেরীয়া বাহিনীর সংকেত বিভাগে কাজ করতেন। এজন্য মুক্তিযোদ্ধারা তাকে “মুক্তির দূত” বলে ডাকতেন।

তিনি দীর্ঘ ৮ বছর যাবত বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন। গত কয়েক মাস পুর্বে তার সহধর্মিনী রেজিয়া বেগমও ইন্তেকাল করেন।

মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তান সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছে। সম্পাদনা – অলক কুমার