ভারত থেকে ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল কিনতে যাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের কাছে ৪৫০ মিলিয়ন ডলারের মিসাইল কেনা নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনায় পৌঁছেছে ইন্দোনেশিয়া।
এই চুক্তি চূড়ান্ত হলে ফিলিপাইনের পর আসিয়ানের দ্বিতীয় দেশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া ভারত থেকে ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল কিনতে যাচ্ছে। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে গত মাসে ভারতে আসেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো। ডয়চে ভেলে বলছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে প্রাবোও সুবিয়ান্তো ব্রহ্মোসের সিইও’র সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। সেইসঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর প্রধান মুলাম্মদ আলির নেতৃত্বে একটি উচ্চ-স্তরের প্রতিনিধিদল ব্রহ্মোস এরোস্পেস সদর দপ্তর পরিদর্শন করেছে।
খবরে বলা হয়, ভারত-রাশিয়া যৌথভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। দক্ষিণ এশিয়া ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এই ক্ষেপণাস্ত্র খ্যাতি অর্জন করেছে। অনেক বিশ্লেষকের ধারণা, চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ইন্দোনেশিয়া তার নৌশক্তি ও সামরিক বাহিনীকে আধুনিকীকরণ করতে এই ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে যাচ্ছে।
ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন এবং ভিয়েতনামের আপত্তি সত্ত্বেও চীন জবরদস্তিমূলক কৌশল এবং সামরিক শক্তির মাধ্যমে দক্ষিণ চীন সাগরে আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তারের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বজায় রেখেছে। এর মধ্যেই ইন্দোনেশিয়া এই চুক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক শ্রীকান্ত কোন্দাপল্লী বলেছেন, ইন্দোনেশিয়াকে ব্রহ্মোস ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের জন্য ভারতের সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং এটিকে অন্যভাবে দেখা উচিত নয়।
তিনি বলেন, আমি মনে করি না যে ভারত এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ চীন পাকিস্তানে পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং মিয়ানমার ও অন্যান্য দেশে সাবমেরিন দিয়েছে যা ভারতীয় নিরাপত্তার উপর প্রভাব ফেলেছে। সে সময় চীন উল্লেখ করেছিল যে এটি দুটি সার্বভৌম দেশের মধ্যে একটি চুক্তি। তাই এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বা অন্য কোনো দেশের কাছে ভারতীয় অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে চীনের অন্য কিছু ভাবা উচিত নয়। ভারতও এই বিষয়ে সচেতন, যে কারণে তারা চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।
তবে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র দপ্তর ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তির সুনির্দিষ্ট বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।