ভারতের হঠাৎ চালানো মধ্যরাতের সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা— চীনা প্রযুক্তিতে তৈরি ‘এইচ-কিউ-৯’। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই রাশিয়ার এস-৩০০-এর আদলে নির্মিত এই চীনা প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আকাশসীমা নিরাপদ রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। তবে বাস্তব যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কতটা কার্যকর, তা নিয়ে চলছে বিস্তর বিতর্ক।
বুধবার (৭ মে) মধ্যরাতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির সীমান্তে ভারত তাদের সামরিক অভিযান চালায়। ইসলামাবাদ দাবি করে, তারা ওই অভিযানে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এই দাবির পরই সামনে আসে পাকিস্তানের ব্যবহৃত ‘এইচ-কিউ-৯’ সিস্টেম এবং তা নিয়ে শুরু হয় জোর আলোচনা।
চীনের তৈরি এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ট্রান্সপোর্টার ইরেক্টর লঞ্চার থেকে মিসাইল উৎক্ষেপণে সক্ষম। একটি পূর্ণাঙ্গ সিস্টেমে থাকে ছয় বা তারও বেশি ট্র্যাক, প্রত্যেকটিতে চারটি করে মিসাইল কনটেইনার। প্রতিটি মিসাইলের ওজন প্রায় ২ টন এবং দৈর্ঘ্য ৬.৮ মিটার। এটি শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমান, ক্রুজ মিসাইল, এয়ার-টু-সারফেইস মিসাইল ও স্বল্প পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল ধ্বংসে সক্ষম।
এ সিস্টেমে ব্যবহৃত রাডার ১২০ কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্য শনাক্ত করতে পারে এবং একযোগে ১০০টি লক্ষ্যবস্তু ট্র্যাক করতে সক্ষম। একই সঙ্গে ৫০টিরও বেশি টার্গেটে আঘাত হানার ক্ষমতা রাখে।
১৯৮০-এর দশকে চীন এই প্রযুক্তি উন্নয়নের কাজ শুরু করে এবং ২০০৯ সালে নিজেদের ৬০ তম বার্ষিক সামরিক কুচকাওয়াজে এটি প্রকাশ্যে আনে। রাশিয়ার এস-৩০০ এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্যাট্রিয়ট সিস্টেমের ছায়া অনুসরণ করেই এটি তৈরি হয়।
অবশ্য ভারতীয় পক্ষের দাবি, এই চীনা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাকিস্তানের কোনো কাজে আসেনি। তারা বলছে, চীন তাদের বন্ধু দেশ পাকিস্তানকে কার্যকর প্রযুক্তি না দিয়ে ঠকিয়েছে। এই দাবি ঘিরে ভারতীয় সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ। তবে পাকিস্তান যেভাবে ভারতীয় বিমান ও ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করছে, তাতে চীনা প্রযুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে।
আসলে কতটা কার্যকর এই ‘এইচ-কিউ-৯’— এ প্রশ্ন এখন সামরিক বিশ্লেষক ও কূটনৈতিক মহলে গভীর আলোচনার জন্ম দিচ্ছে।