ভারতের পার্লামেন্টের দুই কক্ষ—লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াক্ফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। বিক্ষুব্ধ জনতা একটি ঘটনায় ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এক নেতার বাড়িতে আগুন দেয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকলেও বুধবার (৯ এপ্রিল) থেকে এই আইন কার্যকর হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শনিবার ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ওয়াক্ফ (সংশোধনী) বিল ২০২৫ এবং মুসলমান ওয়াক্ফ (রহিতকরণ) বিল ২০২৫–এ সম্মতি দেন। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বিল দুটি আইনে পরিণত হয়।
আইন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সংশোধিত এই আইনে ওয়াক্ফ সম্পত্তি ঘোষণার ক্ষমতা ওয়াক্ফ বোর্ডের পরিবর্তে জেলা প্রশাসক বা সমমর্যাদার সরকারি কর্মকর্তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, নতুন আইনের আওতায় একজন অমুসলিমকে ওয়াক্ফ বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এমনকি, প্রতিটি রাজ্যের ওয়াক্ফ বোর্ডে অন্তত দুজন অমুসলিম সদস্য নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী, জেলা প্রশাসক এখন বিতর্কিত যেকোনো সম্পত্তিকে ওয়াক্ফ ঘোষণা বা তা সরকারের মালিকানায় হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
উল্লেখ্য, ভারতের ওয়াক্ফ আইন প্রথম চালু হয় ১৯৫৪ সালে। পরে ১৯৯৫ সালে সংশোধন করে ওয়াক্ফ বোর্ডের ক্ষমতা বাড়ানো হয়। তবে বিজেপির দাবি, এই আইনটির মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বছরের পর বছর বিপুল সম্পত্তির একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে।
নতুন আইন কার্যকর হওয়ায় একদিকে সরকার দাবি করছে এটি স্বচ্ছতা ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার একটি পদক্ষেপ, অপরদিকে সমালোচকরা একে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।