প্রায় দেড় বছর আগে বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়েছিল শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে। উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক টার্গেট কিলিং বা গুপ্তহত্যা—এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ভিডিওসহ দেওয়া পোস্টে তিনি জানান, সুব্রতকে বাংলাদেশে এনে নতুন পরিচয়ে যুক্তরাজ্যে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। তবে ৫ আগস্ট ২০২৪ সালের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে তার আশ্রয়দাতারা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পড়লে এই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
জুলকারনাইন লিখেছেন, “বিশেষ ব্যবস্থায় তাকে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রস্তুত করা এবং নতুন পরিচয়ে বিদেশে পাঠানো। কিন্তু পরিকল্পনা ব্যাহত হলে সে সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশে যায়।”
তিনি আরও জানান, শিগগিরই সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদের পরিকল্পিত গুপ্তহত্যার টার্গেট কারা ছিলেন এবং কে কে তাদের সহায়তা করছিল, সে বিষয়েও তথ্য প্রকাশ করা হবে।
এদিকে বুধবার (২৮ মে) রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় দায়ের করা অস্ত্র মামলায় সুব্রত বাইনকে আট দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। একই মামলায় গ্রেপ্তার অপর তিনজনের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন।
সুব্রত বাইন ২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় ছিলেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসসহ একাধিক মামলার অভিযোগ রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে তার মাথার মূল্যও নির্ধারণ করা হয়েছিল।
অনেকদিন পলাতক থাকার পর তিনি ভারতে গ্রেপ্তার হয়ে সেখানকার জেলেও ছিলেন বলে জানা যায়। তবে তিনি ঠিক কবে বাংলাদেশে ফিরেছেন, সে বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
আদালতে দেওয়া বক্তব্যে সুব্রত বলেন, “আমি আড়াই বছর আয়নাঘরে ছিলাম। ৫ তারিখ রাত ৩টার দিকে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমাকে মাথায় রড দিয়ে পেটানো হয়েছিল।”
ঘটনাটি ঘিরে দেশের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।