কেরালার মালাপ্পুরমে বসবাসরত দুই বোন পাকিস্তানি নাগরিকত্ব ত্যাগের সনদ না পাওয়ায় ভারতীয় নাগরিকত্বও পাচ্ছেন না। ফলে তারা কার্যত রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন।
দুই বোন আদালতে জানান, ২০০৮ সাল থেকে তারা কেরালায় বসবাস করছেন। ২০১৭ সালে দিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনে পাসপোর্ট জমা দিলেও তখন তারা ২১ বছরের কম বয়সী ছিলেন। পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, অপ্রাপ্তবয়স্করা স্বাধীনভাবে নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে পারেন না। পরবর্তীতে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর আবেদন করলেও হাইকমিশন কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই আবেদন নাকচ করেছে।
ভুক্তভোগীর মা রাশিদা বানু অভিযোগ করেন, “নাগরিকত্ব ত্যাগের সনদ না দিয়ে হাইকমিশন আমাদের পাসপোর্টও ফেরত দেয়নি। আমার ছেলে ও আমি নাগরিকত্ব পেয়েছি, কিন্তু দুই মেয়ে এখনও রাষ্ট্রহীন।”
২০১৮ সালে পাকিস্তান হাইকমিশন একটি সনদ দেয়, যেখানে বলা হয় ভারত নাগরিকত্ব দিলে পাকিস্তানের আপত্তি নেই। তবে ভারত সরকার তা গ্রহণ করেনি।
এ পরিস্থিতিতে দুই বোন কেরালা হাইকোর্টে মামলা করেন। গত বছর হাইকোর্টের একক বেঞ্চ তাদের পক্ষে রায় দিলেও চলতি বছরের ২৩ আগস্ট দুই বিচারপতির বেঞ্চ আগের রায় বাতিল করেছে। রায়ে বলা হয়েছে, ভারতীয় নাগরিক হতে হলে আগে স্পষ্টভাবে পাকিস্তানি নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হবে।
দুই বোনের আইনজীবী এম সসীন্দ্রন জানান, “২০১৭ সালে তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় সনদ পাননি। এখন প্রাপ্তবয়স্ক হলেও পাসপোর্ট নেই, ফলে পাকিস্তানে গিয়ে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তারা কার্যত আটকে গেছেন।”
ভারতীয় সংসদে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ হাজারের বেশি পাকিস্তানি নাগরিক ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য অপেক্ষা করছেন। দুই বোনের পরিবারও বছরের পর বছর ধরে এই জটিলতার মুখোমুখি।
পারিবারিক ইতিহাসও জটিল: বাবা মোহাম্মদ মারুফ পাকিস্তানে গিয়ে বসবাস করলেও মা-বাবা ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। চার সন্তানের মধ্যে এক ছেলে ও মা রাশিদা নাগরিকত্ব পেয়েছেন, দুই মেয়ে এখনও পরিচয়হীন।