ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টাকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু জেরিন তাসনিম অনিমাকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপয়েন্টে ধরা পড়েন তিনি। ওইদিন তিনি এমিরেটস এয়ারলাইন্সের (ইকে ৫৮৭) একটি ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রে রওনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র এবিএম রওশন কবীর জানান, প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী কোনো কর্মীকে বিদেশে যেতে হলে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) নিতে হয়। তবে অনিমার দাখিল করা এনওসি অবৈধ ছিল এবং তিনি যে স্টাডি লিভের আবেদন করেছিলেন, তাও গৃহীত হয়নি। এসব কারণে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে দেশত্যাগের অনুমতি দেয়নি।
রওশন কবীর বলেন, “ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা পরিষ্কারভাবে চাকরিবিধির পরিপন্থী। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ এবং বিমান কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে।”
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, অনিমার পিতা আশরাফ আলী সরদার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট পার্সার হিসেবে কর্মরত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মেয়ের পক্ষে প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করে আসছিলেন। হজ মৌসুমে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের সময় অন্য কেবিন ক্রুরা কাজ করলেও অনিমা ভুয়া চিকিৎসা সনদ দাখিল করে ছুটি নেন।
তথ্য মতে, চলতি বছরের ১ মার্চ তিনি মেডিক্যাল ছুটিতে যান, যা পরে ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ২৯ মে পর্যন্ত নেওয়া হয়। কর্মকর্তারা জানান, তার হাতের প্লাস্টার ও এক্স-রে রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ ছিল। অভিযোগ রয়েছে, তিনি অন্য ব্যক্তির এক্স-রে রিপোর্ট ব্যবহার করে ভুয়া চিকিৎসা সনদ তৈরি করেন, যা বিমানের চিকিৎসক ডা. মাসুদের সহায়তায় জমা দেওয়া হয়।
এছাড়া অনিমার স্টাডি লিভের আবেদন নিয়মবহির্ভূত ছিল। নিয়মানুযায়ী, চাকরির বয়স তিন বছর না হলে এ ধরনের ছুটি অনুমোদনযোগ্য নয়, অথচ অনিমার চাকরির বয়স মাত্র দুই বছর।
সূত্র আরও জানায়, ভিসা প্রক্রিয়ায় জটিলতা এড়াতে অনিমার বাবা ভুয়া চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্র তৈরি করে দেন এবং প্রয়োজনীয় অনুমতি না নিয়েই মেয়েকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন। এপ্রিল মাসে অনিমা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পান।
এ ঘটনায় জেরিন তাসনিম অনিমা ও তার পিতা আশরাফ আলী সরদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।