রাজপথে থাকা পুরোনো রাজনৈতিক দলগুলোর মূল আলোচনা নির্বাচনকে ঘিরেই। চলতি বছরের ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। বিভিন্ন সময়ে বিদেশি গণমাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার দেয়া বক্তব্যে ডিসেম্বরে নির্বাচনের সম্ভাব্যতা দেখা গেছে।
তবে, গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচনের ব্যাপারে আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই বক্তব্যে ডিসেম্বরে নির্বাচনের সম্ভাব্যতা দেখছেন না কেউ কেউ। বরং নির্বাচন কিছুটা পিছিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিতের কথা জানিয়েছেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বললেন, সম্প্রতি নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এখানে ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি বলা হয়নি। সুতরাং মাঝখানে ছয় মাসের একটি ব্যাপার। তাই নির্বাচন একটু পেছাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতির ধরণও দৃশ্যমান নয়।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ছাত্রদের দলের সময় প্রয়োজন। ড. ইউনূস ছাত্রদের সময় দেয়ার কথা বলেছেন। নির্বাচন পিছিয়ে যদি তাদের সময় দেয়া হয়, তাহলে বড় প্রশ্ন উঠতে পারে।
এদিকে, সরকারের বার্তা ছিল সংস্কারের সাথে নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কিত। জুন পর্যন্ত ভোট গড়ানোর মানে কি দীর্ঘ সংস্কার প্যাকেজের দিকে হাঁটছে সরকার?
এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই প্রক্রিয়ায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেভাবে সংস্কার চেয়েছিলেন, সেভাবে তিনি করতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে না। কারণ, বিএনপি সংবিধান সংস্কারের অনেকগুলো ব্যপারে তাদের অবস্থান থেকে হয়তো সরবে না।
অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেছেন, যত দেরি হবে ততোই সংস্কারের প্রতি জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর আগ্রহ কমতে থাকবে। ফলে সংস্কার বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। বিচার ও সংস্কারের ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ হলে চ্যালেঞ্জ বাড়বে।
প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে দ্রব্যমূল্য, ব্যাংকিং খাতের সফলতা ও বিনিয়োগ নিয়ে আশার কথা জানিয়েছেন। সরকারের এই চেষ্টার সাথে রাজনৈতিক অঙ্গনের মানুষেরাও দ্বিমত করছেন না।