বিশেষ প্রতিবেদক : টাঙ্গাইল জেলার উত্তরে অবস্থিত মধুপুর উপজেলা।
এই উপজেলায় প্রাকৃতিক শালবনের আশে পাশে গড়ে উঠেছে ২০টি ইটভাটা।
পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০টি ইটভাটার মধ্যে পরিবেশগত ছাড়পত্র আছে মাত্র ১টি ইটভাটার।
বাকী ১৯টি ইটভাটার কোন প্রকার অনুমোদন নাই।
আর এইসব অবৈধ ইটভাটায় অবাধে পুড়ানো হচ্ছে প্রাকৃতিক শালবনের গাছ। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে শালবন ও জীববৈচিত্র্য।
সরেজমিন মধুপুর শালবন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ২০টি ইটভাটার মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতাদের কয়েকটি ভাটা বন্ধ রয়েছে।
চালু ইটভাটাগুলোতে সবাই কাঠ পুড়াচ্ছে। দুই একটা ইটভাটায় কয়লা থাকলেও সেটা শুধু দেখানোর জন্য।
সব ইটভাটায় পাহাড়ের লাল মাটি ও তিন ফসলী জমির মাটি দিয়ে ইট বানানো হচ্ছে।
মাটিকাটার জন্য প্রশাসনের কোন প্রকার অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
এবিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, এইসব ইটভাটার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার কোন প্রকার নির্দেশনা নাই।
নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)র বিভাগীয় সমন্বয়কারী গৌতম চন্দ চন্দ্র বলেন, বনের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা নির্মাণের কোন প্রকার অনুমোদন নাই।
মধুপুর এলাকার এইসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
মধুপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধের দাবি জানান পরিবেশবাদি সংগঠন সবুজ পৃথিবীর পরিচালক শারমিন আলম।
তিনি বলেন, মধুপুর শালবন ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসকারী এইসব অবৈধ ইটভাটা এখনি বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
বর্তমান সরকারের পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা, একজন পরিবেশ বান্ধব মানুষ আমাদের মধুপুর শালবন রক্ষায় এইসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দিবেন বলে আমরা আশাবাদী।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) টাঙ্গাইল শাখার যুগ্ম-সম্পাদক বিপ্লব কুমার কর্মকার বলেন, টাঙ্গাইলের ফুসফুস মধুপুর শালবন রক্ষায় এইসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধের দাবি জানিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মধুপুর শালবন এলাকায় বসবাসকারী রানা মাংসাং বলেন, এই বনের সাথে আমাদের আত্মার সম্পর্ক, এই বনেই আমার জন্ম।
এক সময় এই বনে প্রচুর পশু পাখি ছিলো, বিভিন্ন কারনে শালবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ইটভাটার কারনে।
প্রতি বছর বনের প্রচুর গাছ যায় ইটভাটায়। মধুপুর শালবন রক্ষায় অবৈধ এইসব ইটভাটা বন্ধ করা দরকার বলে আমি মনে করি।