একসময় দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শালবন হিসেবে খ্যাত টাঙ্গাইলের মধুপুর গড় তার সমৃদ্ধ বনজ ঐতিহ্য ও বন্যপ্রাণীর জন্য পরিচিত ছিল। প্রায় ৪৫ হাজার একরের এ বনে বুনো খাদ্য, বিরল গাছগাছালি ও নানা প্রজাতির প্রাণী-পাখির বাস ছিল। তবে বনাঞ্চল সংকোচন, বিদেশি প্রজাতির আগ্রাসী বনায়ন আর বাণিজ্যিক চাষাবাদের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্য আর জীববৈচিত্র্য।
বনের হারানো ঐতিহ্য রক্ষায় সরকার শাল-গজারিসহ দেশি প্রজাতির গাছের পুনঃস্থাপন, বিদেশি প্রজাতির গাছ নিষিদ্ধকরণ ও বনের সীমানা নির্ধারণসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সম্প্রতি মধুপুর শালবন এলাকায় গৃহ জরিপ ও জনশুমারি কার্যক্রম শুরু করেছে বন বিভাগ।
গত ৯ জুলাই বিকেলে দোখলা রেঞ্জের বাংলোতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সহকারী বন সংরক্ষক আবু সালেহ এবং প্রধান অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন।
বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় প্রায় ১৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। গৃহ জরিপের মাধ্যমে ৮ ইউনিয়নের ১০২টি গ্রামে বননির্ভর জনগোষ্ঠীর তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এতে জমি, আবাদি ফসল, লিজ, গাছের পছন্দসহ বিস্তারিত তথ্য রাখা হবে।
তিনি আরও জানান, গৃহ জরিপ শেষে শাল-গজারিসহ দেশি গাছের চারা রোপণ করা হবে। অংশীদার পরিবারগুলো নিজেদের গাছের হিসাব পাবে এবং বনায়নের গাছ বিক্রি না করেও আর্থিকভাবে লাভবান হবে। এতে বন পুনঃস্থাপনের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যও রক্ষা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
স্থানীয়রা বলছেন, এই প্রকল্প সফল হলে লাল মাটির মধুপুর শালবন তার হারানো ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য ফিরে পাবে।