নিজস্ব প্রতিবেদক : বেশ কিছুদিন যাবত টাঙ্গাইল আওয়ামী লীগে অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছে।
আজ মহান মে দিবসের অনুষ্ঠানে সেটা সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ্যে এসেছে।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়।
ওই সম্মেলনে ফজলুর রহমান খানকে সভাপতি ও সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়।
পরে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাকের বাসভবনে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সভা হয়।
আব্দুর রাজ্জাক, ফজলুর রহমান খান ও জোয়াহেরুল ইসলামের উপস্থিতিতে জেলা আওয়ামী লীগের একটি খসড়া কমিটি চ‚ড়ান্ত করা হয়।
এতে বিগত কমিটির অনেকে বাদ পড়েন। অনেকের পদাবনতি হয়। অনেকে কাঙ্খিত পদ লাভে ব্যর্থ হন। এতে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
পদবঞ্চিতরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রাখেন; তবে এর আগে প্রকাশ্যে একত্র হতে দেখা যায়নি।
মহান মে দিবস পালনের মধ্য দিয়ে সংসদ সদস্য ও পৌর মেয়রের নেতৃত্বে তাঁদের একটি মহড়া হয়ে গেল।
এটিকে অনেকেই জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ মনে করছেন।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠল মে দিবস পালনের মধ্য দিয়ে। শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারা অংশ নেন।
এদিকে সংসদ সদস্য ও পৌরসভার মেয়রের নেতৃত্বে পৃথকভাবে মে দিবস পালন করা হয়।
এতে অংশ নেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটিতে কাঙ্খিত পদ না পাওয়া কিছু নেতা।
সোমবার টাঙ্গাইল জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে শহরের পৌর উদ্যানে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক।
আরো পড়ুন – সখীপুর উপজেলা মহিলা আ’লীগ সাধারণ সম্পাদককে জরিমানা
শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বক্তব্য –
জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বালা মিয়ার সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভুঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনির, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আশরাফউজ্জামান স্মৃতি, আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট মামুনুর রশিদ।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সাবেক থানা আ’লীগ সভাপতি ও সদর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ওলিউজ্জামান, সাবেক পৌর মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট জাফর আহমেদ প্রমুখ।
এসময় বিভিন্ন স্তরের শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও তাদের কর্মী সমর্থকেরা উপস্থিত ছিলেন।
অপর গ্রুপের কর্মসূচী –
অপরদিকে টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীরের নেতৃত্বে মে দিবস উপলক্ষে আরেকটি র্যালী শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।
শহীদ মিনারে বক্তব্য রাখেন, টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন; টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল পৌরসভার প্যানেল মেয়র হাফিজুর রহমান স্বপন, কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
আরো পড়ুন – মন্ত্রী-সভাপতি-সেক্রেটারি কেউ সম্মতি দেন নাই, তাই কমিটিতে মুরাদ সিদ্দিকীর নাম নাই!
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক বলেন, টাঙ্গাইল উদ্যানে অনুষ্ঠিত সমাবেশটিই গ্রহণযোগ্য।
এখানে সরকারি কর্মকর্তাসহ সকল শ্রমিক নেতাই অনুষ্ঠানে যোগদান করেছেন।
এ সময় বিক্ষিপ্তভাবে শহরের প্রাণকেন্দ্রে আরেকটি র্যালি বা সমাবেশ কোনভাবেই কাম্য নয়। সম্পাদনা – অলক কুমার