ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনাটি যেন আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয়—এ দেশে মানুষের মৃত্যু কত সহজ আর অজস্র রূপে ঘটে চলে। দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা শিশুর ছোট ছোট জুতা যেন দগ্ধ হৃদয়কে আরও ভারী করে তোলে।
বিধ্বস্তের ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া এক জোড়া জুতার ছবি দেখেই মনে পড়ে যায় বলিউডের জনপ্রিয় ছবি পি কে-এর সেই বিখ্যাত ডায়লগ—“ইনসান নেহি, স্রিফ জুতা রাহে যায়ে গা।” অর্থাৎ, মানুষ হারিয়ে যায়, রয়ে যায় শুধু জুতা।
এই দেশে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা নতুন কিছু নয়। কখনো খোলা ম্যানহোলে, কখনো ময়লার গাড়ির চাকা তলায়, কখনো নির্মাণাধীন ভবন থেকে খসে পড়া ইটে—এভাবেই হারিয়ে যায় অগণিত প্রাণ। তেমনই এক ভয়াবহ স্মৃতি রানা প্লাজা ধস। ১ হাজার ১০০ এর বেশি শ্রমিকের জীবনবিনাশ ঘটেছিল। সেখানেও ভেসে উঠেছিল সেই একি চিহ্ন—ছেঁড়া জুতা, ছিন্নব্যক্তি।
স্পেকট্রাম, রানা প্লাজা, আজিমপুর বা শাহজাহানপুর—সব ঘটনাই প্রমাণ করে আমাদের শোচনীয় অব্যবস্থা আর উদাসীনতার ইতিহাস। বারবার প্রশ্ন জাগে, এত মৃত্যু, এত হারিয়ে যাওয়া—তারপরও কি কোনো শিক্ষা নেই?
মাইলস্টোনের এই ট্র্যাজেডিতে পুড়ে গেছে কোমলমতি শিশুরা, চোখের সামনে হারিয়ে গেছে সম্ভাবনা। যারা বেঁচে আছেন, তাদের বুকে আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে হারানোর ক্ষত। আর রাষ্ট্র? নতুন কোনো দুর্ঘটনা না হওয়া পর্যন্ত সবাই নিশ্চুপ।
এবার কি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেবে বাংলাদেশ? নাকি পরের দুর্ঘটনায় আবারো রাস্তায় পড়ে থাকবে ছোট ছোট জুতা—শুধু মানুষগুলো আর ফিরবে না!