টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মধ্যরাতে মসজিদের মাইকে ডাকাত আসার ঘোষণায় নির্ঘুম রাত কেটেছে স্থানীয়দের। এদিকে গুজবকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে আজগানা ইউনিয়নের তেলিনা খাটিয়ারহাট বাজারে একটি প্রাইভেটকার ও উপজেলা সদরের পুষ্টকামুরী চরপাড়া এলাকায় মাইক্রোবাস আটকিয়ে ভাংচুর করে উত্তেজিত লোকজন। এ সময় চালক ও তার সহকারীকে গণধোলাই দেয় তারা। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তবে বিষয়টি গুজব এবং গুজব সৃষ্টিকারীদের খোঁজে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সায়েদুর রহমান।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে এগারটার দিকে কালিয়াকৈর উপজেলার দারিয়াপুর মসজিদের মাইকে প্রথমে জানানো হয় এলাকায় ডাকাত পড়েছে। এরপর একই উপজেলার সুত্রাপুর মসজিদ থেকেও একই ঘোষণা প্রচার করা হয়। উপজেলার আজগানা গ্রামবাসীর কাছে পৌছালে তাদের মসজিদ থেকেও একই ঘোষণা দেয়া হয়। পরে মাইকের ঘোষণার ও স্থানীয়রা মোবাইল ফোনে একে অপরের আত্মীয় স্বজনকে জানালে মুর্হুতের মধ্যে তা মির্জাপুর উপজেলার সর্বত্র মসজিদের প্রচার হতে থাকে। এদিকে মধ্যরাতে লোকজনের মধ্যে ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে লোকজন লাইট ও লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। এসময় বিভিন্ন রাস্তায় শতশত লোক অবস্থান নেয়।
উপজেলার মুশুরিয়াঘোনা জামে মসজিদের ঈমাম মো. আশরাফ আলী বলেন, গভীর রাতে মসজিদ কমিটির সদস্য সৈয়দ আলীর ফোনে তাকে জানান এলাকায় ডাকাত পড়েছে। পরে তিনি মসজিদে গিয়ে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সাবধান করেন।
ভাতগ্রাম ইউনিয়নের বুড়িহাটী জামে মসজিদের ঈমাম আবুল হাসানও অনুরুপভাবে জানান, রাত আনুমানিক দুইটার দিকে মসজিদ কমিটির সদস্য মাসুদ সাহেব তাকে ফোন দিয়ে ডাকাতের কথা জানালে তিনি মসজিদে গিয়ে মাইকে ডাকাত আসার কথা ঘোষণা করেন।
আজগানা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সিকদার বলেন, কালিয়াকৈর উপজেলার সুত্রাপুর মসজিদের মাইকে ডাকাত আসার কথা শুনে আজগানা মসজিদ থেকেও এই ঘোষণা দেয়া হয়। ডাকাত আসার খবরে শত শথ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এসময় খাটিয়ারহাট বাজারে উত্তেজিত জনতার ডাকাত সন্দেহে একটি প্রাইভেট কার থামিয়ে ভাংচুর করে এবং চালক ও হেলপারকে গণধোলাই দিয়েছে বলে তিনি জানান।
তবে বিষয়টি গুজব এবং গুজব সৃষ্টিকারীদের খোঁজে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সায়েদুর রহমান। উত্তেজিত জনতা যে চারজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছিলো খোঁজ নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক বলেন, ডাকাত আসার কথাটি সম্পুর্ণ গুজব। পুলিশ ও র্যাব এ ব্যাপারে কাজ করছে। যারা গুজব ছড়িয়েছে তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া ববে বলে তিনি জানান।