কুমিল্লার মুরাদনগরে মা ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া রুমা আক্তার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হামলার ভয়াবহ বিবরণ দিয়েছেন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রুমার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে রুমা বলেন, ‘শিমুল চেয়ারম্যান ডিকলার দিছে একবারেই মাইরা ফালা, ২০টা মামলা অইলে অইব আমি দেখব, রুবির বংশ নির্বংশ কইরা ফালা।’ তিনি অভিযোগ করেন, অন্তত ৫০ জন হামলাকারী কাশিমপুর ও কড়ইবাড়ি এলাকা থেকে এসে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের মধ্যে শিমুল চেয়ারম্যান ছাড়াও আবু মেম্বার, বক্কর মেম্বার, বাচ্চু মেম্বার, শরীফ, বাছির, আতিক, আনু মেম্বার, রফিক, রবিউল, জুয়েল, বিল্লাল বাবুর্চিসহ অনেকেই ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া রুমার বোন রিক্তা আক্তার বলেন, ‘শিমুল চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আমরা নিরাপদ নই। আমার মা-বোন ও ভাইকে যারা হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চাই।’
এ ঘটনায় গত দুই দিনে ঢাকায় র্যাব ও কুমিল্লায় সেনাবাহিনীর অভিযানে আটজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা বর্তমানে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাঙ্গরা বাজার থানার এসআই মো. আবু তাহের ভূঁইয়া জানিয়েছেন, তাদের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি হবে।
এদিকে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল এখনো পলাতক রয়েছেন। বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘শিমুল চেয়ারম্যানকে ধরতে অভিযান চলছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রকৃতভাবে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
হত্যাকাণ্ডের পর আতঙ্কে কড়ইবাড়ি ও কাশিমপুর এলাকায় পুরুষশূন্য অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। নিহতদের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদের খুঁজে বের করতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।