যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মাঝেও ভারতীয়দের জন্য ভিসা প্রক্রিয়ায় বড় সুবিধা চালু করেছে চীন। চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ইতিমধ্যেই ৮৫ হাজার ভারতীয়কে ভিসা দিয়েছে দেশটি—যা কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এক কথায় ‘অভূতপূর্ব’।
চীনের ভারতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সু ফেইহং এক্স-এ (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, “আমরা চাই আরও বেশি ভারতীয় বন্ধু চীনে আসুন, চীনের মুক্ত, নিরাপদ ও প্রাণবন্ত সংস্কৃতি দেখুন।”
ভারতীয়দের জন্য বিশেষ ছাড়:
চীনে যাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতে ভারতীয়দের জন্য একাধিক সুবিধা চালু করেছে বেইজিং। এখন থেকে অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই সরাসরি দূতাবাস বা কনসুলেটে গিয়ে ভিসার আবেদন করা যাবে। সংক্ষিপ্ত সফরের জন্য বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না, যা সময় বাঁচাবে। একইসঙ্গে ভিসার ফি কমানো হয়েছে এবং প্রসেসিং সময়ও অনেক কমানো হয়েছে।
ব্যবসা ও পর্যটন উভয় ক্ষেত্রেই ভিসা পাওয়া আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন শহর ও উৎসব কেন্দ্র করে বিশেষ পর্যটন প্যাকেজ চালু করছে চীনের দূতাবাসগুলো।
ভারত-চীন সম্পর্কের প্রেক্ষাপট:
লাদাখের গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে ভারত-চীন সম্পর্ক টানাপোড়েনে রয়েছে। সীমান্তে এখনো উত্তেজনা পুরোপুরি প্রশমিত হয়নি। তবে চীনের সাম্প্রতিক উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সহায়ক হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের ছায়া:
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান শুল্কযুদ্ধ পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষণায় চীনা পণ্যে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হয়েছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চীনও কঠোর শুল্কনীতি নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতকে পাশে চায় চীন।
চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং বলেন, “চীন ও ভারতের অর্থনৈতিক সম্পর্ক পরস্পরকে পরিপূরক। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে দুই দেশ একে অপরকে সহায়তা করতে পারে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের এ কূটনৈতিক সফট অ্যাপ্রোচ এশিয়ার দুই পরাশক্তির সম্পর্কে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে।