নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) ভিজিট বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন শিক্ষকরা।
সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা) পর্যন্ত তিনটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবস্থান করতে হয়েছে বিদ্যালয়ে।
যদিও তাদের বিদ্যালয়ের শেষ সময় ছিল বিকেল সাড়ে তিনটায়।
তবে অতিরিক্ত ওই সময় অপেক্ষায় চরম বিড়ম্বনায় পরেন মহিলা শিক্ষকসহ অসুস্থ শিক্ষকগণ।
বুধবার (২২ মার্চ) এমন ভোগান্তির শিকার হয়েছেন টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলেন, মধুপুরের শোলাকুড়ি ডিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভিজিট করতে আসেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও)।
এ সংবাদে মধুপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বিশেষ করে রাস্তার ধারের বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ সকাল সাড়ে ৮টায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত অবস্থান নেন।
বিড়ম্বনায় ছিলেন বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
ডিপিও ফেরার পথে রাত অবধি তাদের অবস্থান করতে হয়েছে বিদ্যালয়ে।
ফেরার পথে অফিস টাইমে পীরগাছা, ভুটিয়া, গাছাবাড়ী, জলছত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে পারেন তিনি।
এমন সম্ভাবনার শঙ্কায় বিড়ম্বনায় পরেছেন বাকি অন্তত ৫/৬ বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ।
কাকরাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিএডিসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পৌর এলাকার চাড়ালজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধুপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মালাউড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চক গাংগাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ সন্ধ্যা থেকে শুরু করে রাত অবধি তাদের অবস্থান করতে হয়েছে।
তবে এই ভিজিট প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে মৌখিক ঘোষণা ছিল তিনি শিক্ষকদের সাথে কথা বলে তাদের ও বিদ্যালয়েরর খোঁজ খবর নিবেন।
এরপরও তিনি সন্ধ্যায় এক স্কুলে ঢুকে নামাজ পড়ার জন্য বের হন ডিপিইও। এ সময়ও বাকি চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
রাত হয়ে গেলেও ডিপিইওর জন্য রাত অবধি অপেক্ষা করতে হয়েছে ওই শিক্ষকগণকে।
রাত পৌনে আটটার সময় মালাউড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোম্মানা জান্নাত বলেন, এখন আমি বাসায়।
আজ সন্ধ্যার সময় ডিপিইও স্যার বিদ্যালয় এসেছিলেন। তিনি বিদ্যালয়ের কার্যক্রম দেখাসহ শিক্ষকদের খোঁজখবর নিয়ে গেছেন।
শিক্ষক নেতাদের কথা –
মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খান শামীম বলেন, আমি শোলাকুড়ি স্কুলে গিয়েছিলাম। এ ব্যতিত অন্য কোন স্কুলে আমি যাইনি।
মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, মধুপুরের শোলাকুড়ি ডিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে সকাল ১০টায় আসেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিউও)।
সাড়ে তিনটায় ওই বিদ্যালয় থেকে বিদায় নেন।
এ সময় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাকে আমন্ত্রণ জানানোর কারণে তিনি আরো ৯টা বিদ্যালয়ে যান।
ওই বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের খোঁজখবর আর বিদ্যালয়ের অবস্থা দেখেন তিনি।
ডিপিওর বক্তব্য –
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, মধুপুরের শোলাকুড়ি ডিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভিজিট করতে যান তিনি। বিদ্যালয়টি অসাধারণ।
এরপরও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তার সাথে যোগাযোগ করেন। এ কারণে রাত অবধি তিনি উপজেলার ১০টি বিদ্যালয় পরিদর্শন ও শিক্ষকদের খোঁজ খবর নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালের পর কোন ডিপিইও এই উপজেলার বিদ্যালয়গুলো ভিজিট করেন নাই বলে জানিয়েছেন শিক্ষকগণ।
তিনি যাওয়ায় শিক্ষকগণ ভীষণ খুশি। তবে বিদ্যালয় ছুটির পর অতিরিক্ত সময় শিক্ষকগণের অপেক্ষা আর বিড়ম্বনা সৃষ্টির বিষয়ে কোন কথা বলেননি তিনি। সম্পাদনা – অলক কুমার