কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সম্মেলনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় পর্বে সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে বিশেষ অধিবেশন। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষজ্ঞ এবং রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সংলাপ শেষে রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। তিনি জানান, এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য হলো রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরা এবং আসন্ন জাতিসংঘ সম্মেলনে তাদের বাস্তব পরিস্থিতি উপস্থাপন করা। এজন্য বাংলাদেশ সরকার ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান তিনি।
আলোচনায় উত্থাপিত প্রধান উদ্বেগসমূহ:
-
দাতা দেশের তহবিল কমে যাওয়ার আশঙ্কা, যা ক্যাম্পের মৌলিক চাহিদাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
-
১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনসহ বৈষম্যমূলক আইন রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণ।
-
রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘন— নির্বিচারে হামলা, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, জোরপূর্বক শ্রম ও শিশু সেনা নিয়োগ।
-
দীর্ঘস্থায়ী সংকট বাংলাদেশের জন্য বড় চাপ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।
মূল সুপারিশসমূহ:
-
রোহিঙ্গা কণ্ঠস্বর জোরদার ও নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা।
-
টেকসই প্রত্যাবাসনের রোডম্যাপ তৈরি করা এবং মিয়ানমারে নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা।
-
মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে দাতা দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি ও সহযোগিতা নিশ্চিত করা।
-
আস্থা গড়ে তোলা এবং অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ক্যাম্প ভেঙে জনগণকে নিজ ঘরে ফেরার সুযোগ দেওয়া।
-
সংঘবদ্ধ অপরাধ ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি।
-
আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে জবাবদিহিতা ও বিচার নিশ্চিত করা।
সমাপনী বক্তব্যে ড. খলিলুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ সীমিত সম্পদে রোহিঙ্গাদের পাশে আছে। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই দায়িত্ব ভাগাভাগি করতে হবে। তিনি রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার উপর জোর দেন।