ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শত শত টন আমদানি ও রপ্তানি পণ্য পুড়ে গেছে। শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটসংলগ্ন এ কার্গো এলাকায় আগুনের সূত্রপাত হয়।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা হয়নি। তবে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার এক্সপ্রেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি কবির আহমেদ জানিয়েছেন, আগুনে অন্তত এক বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হতে পারে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী যার পরিমাণ প্রায় ১২ হাজার ২১৪ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, কার্গো এক্সপ্রেস, ওয়্যারহাউজ, পণ্যবাহী বিমান, অবকাঠামোসহ পুরো কার্যক্রম স্থবির হয়ে গেছে। এতে শুধু ব্যবসায়ী নয়, দেশের বাণিজ্য খাত বড় ধাক্কার মুখে পড়েছে। কার্গো ভিলেজে সাধারণত আমদানি-রপ্তানির জন্য অপেক্ষমাণ পণ্য সংরক্ষিত থাকে, যা শুল্কায়ন শেষে খালাস করা হয় বা দ্রুত প্রেরণ করা হয়।
রপ্তানি পণ্যের স্পেস সংকট বা শুল্ক বিলম্বের কারণে অনেক চালান কয়েক দিন পর্যন্ত এখানে রাখা হয়। আকাশপথে পণ্য পরিবহনকারী আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল জানান, অসংখ্য আমদানিকারকের পণ্য পুড়ে গেছে এবং বিমা দাবির প্রক্রিয়া শুরু করতেও সময় লাগবে।
বিশ্লেষকদের মতে, শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ দেশের আমদানি-রপ্তানির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। এখানে শুল্ক বিভাগ, বিমান সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে। আগুনে শুধু পণ্য নয়, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) নিয়ম অনুযায়ী, বিমানবন্দরের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার আগে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা মূল্যায়ন সম্পন্ন করতে হবে। বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ অগ্নিকাণ্ড আমদানি-রপ্তানিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে এবং পণ্যের লিড টাইমে বড় ধরনের সংকট তৈরি করবে।