নিজস্ব প্রতিবেদক : গোপনে শ্মশানের গাছ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে গনেশ বসাক নামের এক তাঁত ব্যবসায়ির বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইল পৌর শহরের ১০ নং ওয়ার্ডের গাড়াইল এলাকায়।
অভিযুক্ত গনেশ বসাক (৫২) আদি টাঙ্গাইল এলাকার হরে কৃষ্ণ বসাকের ছেলে।
১২ নং ওয়ার্ডের এক প্রভাবশালী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থক বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ক্ষোভসহ চরম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। গনেশ বসাকের কঠোর শাস্তিও দাবি করেছেন তারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গনেশ বসাক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক হওয়া সত্ত্বেও শুধু টাকার লোভে পরিচালনা কমিটির অনুমতি ছাড়াই শ্মশানের শত বছরের বট ও গোটা প্রজাতীর দুটি গাছ কেটে বিক্রি করেছেন।
১২ নং ওয়ার্ডের এক প্রভাবশালী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থক হওয়ার প্রভাবে তিনি এমন অধর্মের কাজ করেছেন।
গত পৌর নির্বাচনে প্রভাবশালী ওই প্রার্থীর সমর্থক গনেশের বিরুদ্ধে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখানোসহ হয়রানীর অভিযোগও রয়েছে।
তারা জানান, পৌরসভার ১০ ও ১২ নং ওয়ার্ডের বেড়াই, গাড়াইল, বাজিতপুর ও আদি টাঙ্গাইল এলাকার প্রায় পাঁচ শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বীর মহাশ্মশান ঘাট এটি।
প্রায় শতবর্ষ যাবৎ ওই শ্মশান ঘাটে প্রয়াতদের শেষকৃত সম্পন্ন করেন এলাকাগুলোর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। গত ১১ এপ্রিল ওই গাছ দুটি বিক্রি করা হয়েছে বলেও জানান তারা।
এলাকাবাসীর কথা –
আদি টাঙ্গাইল এলাকার কৃষ্ণ বসাক বলেন, গনেশ কাউকে না জানিয়ে গাছ দুটি বিক্রি করেছেন।
একজনের শেষকৃত করতে এসে আমরা দেখি গাছ দুটি বিক্রি করা হয়েছে।
গাছ কাটার শ্রমিকদের মাধ্যমে জানতে পারি গনেশ বসাক গাছ দুটি বিক্রি করেছেন।
এই গাছের ছায়ায় এখানে আগত মানুষ শেষকৃত সম্পন্ন করতে পারতো।
রৌদ বৃষ্টিতে এখন এই শ্মশান ঘাটে চরম সমস্যা ভোগ করছেন আগতরা। গাছ কেটে চরম অন্যায় করেছেন গনেশ বসাক।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের গাছ বিনা অনুমতিতে তিনি কাটলেন কিভাবে এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।
বাজিতপুর এলাকার প্রদীপ বসাক বলেন, গাছ কেটে চরম অন্যায় করেছেন গনেশ।
তবে গাছ কাটার বিষয়ে গনেশ দাবি করেছেন পরিচালনা কমিটির সভাপতি তাকে অনুমতি দিয়েছেন।
তবে অনুমতি দেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন সভাপতি। গাছ কেটে চরম অন্যায় করেছেন গনেশ। তার বিচার দাবি করেছেন তিনি।
অভিযুক্ত গনেশ বসাক গাছ কাটার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ৬৭০০ টাকায় গাছ দুটি বিক্রি করেছি।
শ্মশান ঘাট পরিচালনা কমিটির সভাপতির মৌখিক অনুমতি নিয়েই গাছ দুটি বিক্রি করা হয়েছে। অনুমতি দেয়ার বিষয়টি এখন অস্বীকার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
গাড়াইল সম্মিলিত মহাশ্মশান ঘাট পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিল সেন বলেন, গনেশ পরিচালনা কমিটির কেউ নন।
এছাড়া তাকে গাছ বিক্রি করার কেউ অনুমতি দেননি। চার গ্রামের সম্মিলিত শ্মশান ঘাট এটি। গনেশের গ্রামের মানুষ বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন। এ কারণে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে গাড়াইল সম্মিলিত মহাশ্মশান ঘাট পরিচালনা কমিটির সভাপতি কার্তিক চন্দ্র বসাক জানান, বিষয়টি নিয়ে দুই একদিনের মধ্যে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকের আগে কিছুই বলা যাচ্ছেনা। সম্পাদনা – অলক কুমার