টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে সংবাদ প্রকাশের জেরে মিথ্যা মামলায় মধ্য রাতে এক সাংবাদিককে মারধর করে গ্রেপ্তারের অভিযোগ উঠেছে সদর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত ২টার দিকে নিজ বাড়ি উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের নারান্দিয়া গ্রামে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক নিরপেক্ষ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি। এছাড়া তিনি কালিহাতী প্রেসক্লাবের সদস্য। পরে রোববার বিকেলে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে জাহাঙ্গীরকে কারাগারে প্রেরণ করে৷ এ ঘটনায় সাংবাদিক মহল এবং পরিবারের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সাংবাদিকবৃন্দ ও স্থানীয় জানায়, গত ২০ আগস্ট কালিহাতীতে শওকত তালুকদার নামেন এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রীর বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকার প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়৷
শওকত তালুকদার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের খবর সংগ্রহ ও নিউজ করেন দৈনিক নিরপেক্ষ পত্রিকার কালিহাতী প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম। নিউজের পর সাংবাদিক জাহাঙ্গীরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে শওকতের স্ত্রী। সেই সংবাদের জের ধরে গত ১৭ নভেম্বর শওকত তালুকদারের স্ত্রী বাদি হয়ে জাঙ্গাঙ্গীরের নামে মিথ্যা ধর্ষণের চেষ্টা করে।
স্থানীয় সাংবাদিকরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা দ্রুতই জাহাঙ্গীরের মুক্তির দাবি করেছে।
পরিবারের সদস্যরা বলেন, রাত ২টার দিকে ঘরের পিছনের গেট এবং টিনের বেড়া ভেঙে যেভাবে পুলিশ সদস্যরা প্রবেশ করেছিলো, তাতে মনে হয়েছে কোন ডাকাত সদস্য কিংবা চোরের দল প্রবেশ করেছে৷
সাংবাদিক জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা সবাই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলাম। তখন রাত দুইটার দিকে পিছনের গেট এবং টিনের বেড়া ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করে৷ এসময় বাবা-মা ডাকাত বলে ডাকচিৎকার শুরু করে৷ পরে আমি ও আমার ভাই বাইরে বের হই। এসময় তারা আমার ভাইয়ের সাথে ধস্তাধস্তি এবং মারধর করে নিয়ে যায়৷ কিন্তু কোন মামলার কিংবা কি কারণে গ্রেপ্তার করেছে সে সময় তা তারা কিছুই বলেনি। এভাবে হয়রানি করে গ্রেপ্তারের বিচারের দাবি করছি৷ জাহাঙ্গীরের দ্রুত মুক্তির দাবি করছি৷
এলাকাবাসীর দাবি, একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে হয়রানি ও পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা বিষয়টির সুষ্ঠু ও সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করা।
এ ব্যাপারে কালিহাতী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মুশফিকুর রহমান মিল্টন বলেন, উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে একটি মেয়েকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। ওই মেয়ের নামে তার স্বামীর কাছ থেকে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের করায় আদালতে প্রতারণার মামলা রয়েছে৷ মূলত ওই নারীর নামে সংবাদ প্রকাশ করায় এমন মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমরা সাংবাদিক জাহাঙ্গীরের দ্রুত মুক্তির দাবি করছি।
পুলিশ জানায়, ভূক্তভোগী ওই নারী প্রথমে টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করে। পরে আদালতে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশকে মামলাটি এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রিপন কুমার দাস বলেন, পিছনের টিন সরিয়ে দিয়ে কালিহাতী থানার পুলিশের সহযোগিতায় আমরা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করেছি৷ তার নামে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা রয়েছে। জাহাঙ্গীরকে মারধর করা হয়নি বরং তারা আমাদের দেখে উত্তেজিত হয়েছিলো৷
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ মোরাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে পাওয়া যায়নি।











